কক্সবাজারে এসে দিনব্যাপী ব্যস্ত সময় পার করলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের প্রতিনিধি দল। রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক, বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সরাসরি অবগত হন তারা।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক শেষে ইউরোপে এ সংকট তুলে ধরার আশ্বাসও দেন প্রতিনিধিরা।
বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ আশ্রয়শিবির কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং ক্যাম্প। এই মেগা ক্যাম্পে বসবাস করছে লাখ লাখ রোহিঙ্গা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় ৪ নম্বর ক্যাম্পে পৌঁছায় ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল। সুরক্ষা ব্যবস্থা ও রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন পদ্ধতি সম্পর্কে অবগত হওয়ার পর যান বর্ধিত ৪ নম্বর ক্যাম্পে।
এরপর প্রতিনিধি দলটি ডব্লিউএফপি পরিচালিত খাদ্য বিতরণ কার্যক্রম ঘুরে দেখেন। তারপর রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবক ও কমিউনিটি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করে ক্যাম্পের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা নেন। আর দুপুরে পরিদর্শন করেন রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম ও সাংস্কৃতিক স্মৃতি কেন্দ্র।
এদিকে, বিকেলে কক্সবাজার শহরে ফিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. মিজানুর রহমানের সঙ্গে ৪৫ মিনিটের এক বৈঠক করেন তারা। বৈঠকে রোহিঙ্গা সংকট, সহায়তার বর্তমান অবস্থা এবং ফান্ড ঘাটতির প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে প্রতিনিধি দলের প্রধান ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও শরণার্থী কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চলমান প্রকল্প এবং সার্বিক রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জানতে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দল কক্সবাজার সফর করেছে। তারা তার সঙ্গে প্রায় ৪৫ মিনিটব্যাপী একটি বৈঠক করেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বৈঠকে প্রতিনিধি দলটি রোহিঙ্গা সংকটের বর্তমান অবস্থা, আন্তর্জাতিক তহবিলের ঘাটতির প্রভাব এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবদান সম্পর্কে অবগত হন। তারা স্বীকার করেন যে, রোহিঙ্গা সহায়তায় তহবিল সংকটের কারণে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছে।’
মিজানুর রহমান বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সংকটে দ্বিতীয় বৃহত্তম দাতা সংস্থা এবং তারা এ সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন।’
‘প্রতিনিধি দল আরও জানায়, বাংলাদেশ থেকে ফিরে তারা ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি তুলে ধরবেন।’
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৭-১৮ সালের মতো এখন আর ইউরোপীয় পার্লামেন্টে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তেমন আলোচনা হয় না, কারণ ইউক্রেন ও গাজাসহ অন্যান্য বৈশ্বিক সংকট এখন গুরুত্ব পাচ্ছে। তবে প্রতিনিধি দলটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারা এই ইস্যুটিকে আবারও সামনে আনার চেষ্টা করবেন। এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকার উপকমিটির চেয়ারম্যান মুনির সাতৌরী। বিশ্ববাসীকে রোহিঙ্গা সংকট সম্পর্কে সচেতন করতে এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিশ্চিত করতেই তাদের এই সফর- এমনটাই জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ইউটি/টিএ