রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। দিনভর অনশন করেছেন ৭/৮ জন শিক্ষার্থী। এ ছাড়া, শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও জুবেরী ভবনের কক্ষ ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। বর্তমানে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে ক্যাম্পাসে।
এ অবস্থায় বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে ঘটনার দ্রুত সমাধান করতে এক ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করছেন। তবে আমরা শুনতে পেয়েছি বহিরাগতরা ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকছে। এজন্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তারা শিক্ষার্থীদের গায়ে কোনোভাবেই হাত দেবে না। এর আগে, আজ শনিবার দুপুরে উপউপাচার্যদ্বয়ের বাসভবনে শিক্ষার্থীরা তালা দিলে বাসভবনের ভেতরে ঢুকতে না পেরে ফিরে আসেন উপউপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খান, প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান। পরে তারা জুবেরী ভবনের দিকে আসতে থাকলে আন্দোলনকারীরা স্লোগান দিতে দিতে তাদের পেছনে আসতে থাকে।
একপর্যায়ে জুবেরী ভবনের বারান্দায় এলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং ছাপাখানার এক কর্মকর্তা আন্দোলনকারীদের আটকানোর চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ সময় উপউপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন খানকে চারপাশ থেকে আটকে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। ধস্তাধস্তিতে আহত হন উপউপাচার্য অধ্যাপক মাঈন উদ্দীন, একজন উপরেজিস্ট্রার, রাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়ার শুভ ও সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারসহ ৭/৮ জন।
হাতাহাতির একপর্যায়ে উপ-উপাচার্য জুবেরী ভবনের দ্বিতীয় তলায় চলে গেলে শিক্ষার্থীরা তাকে ভবনের দ্বিতীয় তলার বারান্দায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। এরই মধ্যে সেখানে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদসহ কয়েকজন শিক্ষক উপস্থিত হন। এক পর্যায়ে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা, ইসলামী ছাত্রশিবিরসহ বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা ও রাকসুর পদপ্রার্থীরা। জুবেরী ভবনের ভেতরে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা। কিছু শিক্ষার্থী দোতলায় উঠে কয়েকটি ঘরের জানালা ভাঙচুর করেন।
এদিকে এই ঘটনায়, পূর্ণদিবস কর্মবিরতীর ডাক দিয়েছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ঘোষণার পরপরই অনশনরত শিক্ষার্থীরা এসে ভিসির বাস ভবনের গেট ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার পরপরই নারী শিক্ষার্থীরা তাদের হল থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনে যোগ দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী নগরের মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, নির্বাচন উপলক্ষে কিছু অতিরিক্ত পুলিশ কাজ করতেছে। আজকে মেসগুলোতে রেড দেওয়ার কথা ছিল তাদের, বহিরাগতরা কেউ অবস্থান নিচ্ছে কিনা সেটা দেখার জন্য। তারাই এখন অতিরিক্ত হিসেবে ক্যাম্পাসে মোতায়েন রয়েছে।
ইউটি/টিএ