প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেছেন, জাতীয় পার্টির নাম শুনলে কনফিউজড হই। কারণ ওখানে হাফ ডজনের মতো হবে।
লাঙ্গলের (জাপা) দাবিদারও একাধিক।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠেয় সংলাপে জাতীয় পার্টিকে (জাপা) ডাকা হবে কি না জানতে চাইলে সিইসি বলেন, “সময় আসুক তখন আপনারা দেখবেন। জাতীয় পার্টি বললে আমি একটু কনফিউজড হই। কারণ ওখানে অন্তত হাফ ডজনের মতো হবে। লাঙ্গলের দাবিদারও একাধিক। এজন্য আমি বুঝতে পারতেছি না। ”
৯০-এর দশকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের গড়া দল জাতীয় পার্টি (জাপা) সময় সময় নানা দ্বন্দ্বে বিভক্ত হয়ে গেছে। বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত আছে বাইসাইকেল প্রতীকের আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি), গরুর গাড়ি প্রতীকে ব্যারিষ্টার আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), কাঁঠাল প্রতীকে অধ্যাপক ড. এম এ মুকিতের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি ও জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জাপা)।
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ মারা যাওয়ার পর থেকে দলটিতে আরেক দফা ভাঙ্গনের টানাপোড়েন চলছে। মূলত তার ভাই জিএম কাদের ও স্ত্রী রওশন এরশাদপন্থীদের মধ্যে চলছে এই বিরোধ। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও দুই পক্ষ নিজেদের লাঙ্গলের কাণ্ডারী দাবি করে। তবে জিএম কাদেরের অংশের নামে সমস্ত কাগজ থাকায় সেই অংশের প্রার্থীদেরই লাঙ্গল প্রতীক বরাদ্দ দেয় ইসি। এরপর দ্বন্দ্ব কেটে যায়। তবে অভ্যুত্থানের পর ফের চলছে দুই অংশের লড়াই।
এরশাদ মারা যাওয়ার পর তার সাবেক স্ত্রী বিদিশা এরশাদপন্থীরাও দলটিতে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। তবে সে উদ্যোগ শুরুতেই ইতি হয়ে যায়। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ‘ডামি’ বিরোধী দলের ভূমিকায় থাকায় অনেকেই জাপাকে ফ্যাসিস্টের দোসর আখ্যা দেন। যে জন্য দলটির নিবন্ধন বাতিলের দাবিও উঠেছিল। এই প্রেক্ষাপটে নিবন্ধন বলবৎ থাকলেও ভোটের প্রক্রিয়ায় ইসি তাদের ডাকবে কি না, সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। আর বিষযটিই খোলাসা করতে সিইসির কাছে তার কমিশনের অবস্থান জানতে চান সাংবাদিকরা।
আগামী রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) থেকে সংলাপ শুরু করছে ইসি। এক্ষেত্রে প্রথমেই ডাকা হচ্ছে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের। এবার নারী নেত্রী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, গণমাধ্যম, জুলাই যোদ্ধা এবং সবশেষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ করবে কমিশন।
আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ভোটের লক্ষ্য নিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা করতে চায় নাসির কমিশন। এজন্য সব প্রস্তুতি এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
এবি/টিএ