যুব বেকারত্ব বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে ‘ওয়ার্ল্ড প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন ফর ইয়ুথ’-এর ৩০তম বার্ষিকী উপলক্ষে একটি উচ্চপর্যায়ের সভায় যোগ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আমার বয়স ৮৫। তাই আন্তঃপ্রজন্ম সহযোগিতার গুরুত্ব আমি গভীরভাবে অনুভব করি। গত বছর বাংলাদেশে আমরা দেখেছি তরুণদের অসাধারণ শক্তি। তারা সাহসিকতার সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে চলা স্বৈরতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছে, দেশের পথ নতুনভাবে নির্ধারণ করেছে এবং সংস্কার ও গণতান্ত্রিক রূপান্তর চালাতে আমাকে দায়িত্ব দিয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, তরুণরা বিশ্বের পরিবর্তনের প্রধান চালিকাশক্তি হলেও সবচেয়ে আগে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন, প্রোটেকশনিজম ও ডিজিটাল বিভাজনে। সবচেয়ে গুরুতর সমস্যা হলো বেকারত্ব। তরুণদের বেকারত্বের হার প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চার গুণ বেশি, বিশেষ করে স্বল্প আয়ের দেশগুলোতে।
বাংলাদেশে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি গ্রহণের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এর মাধ্যমে তরুণরা অর্থায়ন, দক্ষতা ও বাজারে প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। ফলে তারা চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি তৈরি করছে। পাশাপাশি সংস্কার কমিশন ও গণতান্ত্রিক পুনর্নির্মাণ প্রক্রিয়ায় তরুণদের সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়েছে। এমনকি একটি জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা চালু করা হয়েছে, যাতে নীতিনির্ধারণে তরুণদের মতামত প্রতিফলিত হয়।
তিনি বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের যুব কৌশল ২০৩০, Youth, Peace and Security এজেন্ডা, এবং Pact for the Future বাস্তবায়নে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তবে এ-ও বলেন, কোনো দেশ একা যুব ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পারে না।
তার ভাষায়, ‘বিশ্বজুড়ে সহযোগিতা ছাড়া বৈষম্য দূর, আন্তঃপ্রজন্ম নেতৃত্ব তৈরি ও বাধা ভাঙা সম্ভব নয়। অন্যথায় হতাশা অশান্তিতে রূপ নিতে পারে, যা দ্রুত আমাদের আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।’
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ একা বহন করার প্রয়োজন নেই। শুধু তরুণদের তাদের প্রাপ্য অংশীদারিত্ব, নিরাপদ পরিসর ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভূমিকা দিতে হবে। আমি নিশ্চিত, তারা নিজেদের জন্য, পৃথিবীর জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য সঠিক পথই বেছে নেবে।’
ইএ/টিএ