ভারত বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রীয় যুদ্ধবিমান নির্মাতা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল) থেকে দেশীয় যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ৬২৩.৭০ বিলিয়ন রুপি বা ৭.০৩ বিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৮৫৬.১৩ বিলিয়ন টাকা) মূল্যের একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এর লক্ষ্য সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক করা।
এ পদক্ষেপ এসেছে এমন সময়ে, যখন দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের সামরিক শক্তি ও প্রভাব দ্রুত বাড়ছে এবং তারা ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক জোরদার করছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ৯৭টি দেশীয়ভাবে তৈরি তেজস এমকে-১এ যুদ্ধবিমান কেনা হবে এবং এগুলোর ডেলিভারি ২০২৭-২৮ অর্থবছর থেকে শুরু হয়ে ছয় বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং এক্সে পোস্ট করে বলেন, ‘এইচএএলের সরবরাহ করা এই যুদ্ধবিমান ভারতীয় বিমানবাহিনীর কার্যক্ষমতা বাড়াবে, তাদের নিরবচ্ছিন্ন অপারেশন চালিয়ে যেতে সহায়তা করবে এবং প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিকে আরো শক্তিশালী করবে।’
এই খবরটি এলো ভারতীয় বিমানবাহিনীর রুশ-উৎপত্তি মিগ-২১ যুদ্ধবিমানের শেষ ফ্লাইটের একদিন আগে।
এর পর ভারতীয় বিমানবাহিনীর বহরে সাবেক সোভিয়েত যুদ্ধবিমান সংখ্যা কমে দাঁড়াবে ৪২ থেকে ২৯-এ। এটি কর্মকর্তাদের জন্য হতাশার বিষয়, বিশেষত পাকিস্তানের সঙ্গে তিক্ত সামরিক সংঘাতের অভিজ্ঞতার পর। বৃহস্পতিবারের চুক্তি আসলে উন্নত তেজস এমকে-১এ সংস্করণের জন্য একটি ফলো-অন অর্ডার। এগুলো যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের (জিই) ইঞ্জিন দ্বারা চালিত।
২০২১ সালে সরকার এইচএএলের সঙ্গে ৮৩টি এমকে-১এ যুদ্ধবিমানের জন্য একটি চুক্তি করেছিল। তবে এর ডেলিভারি এখনো শুরু হয়নি। এইচএএল এর জন্য দায়ী করেছে জিইকে, কারণ প্রতিষ্ঠানটি ইঞ্জিন সরবরাহে ধীরগতি দেখিয়েছে।
জিই জানিয়েছে, কোভিড-১৯ মহামারির পর উৎপাদন লাইন পুনরায় চালু করা এবং বৈশ্বিক সাপ্লাই চেইন পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জের কারণে এই বিলম্ব হয়েছে।
চলতি বছরের মার্চে এমকে-১এ যুদ্ধবিমানের প্রথম ইঞ্জিন সরবরাহ করেছে জিই। ভারতীয় কর্মকর্তারা আশা করছেন, চলতি অর্থবছরেই উৎপাদন ও সরবরাহ স্থিতিশীল হবে।
নতুন অর্ডারের ফলে ভারতের মোট তেজস বহর দাঁড়াবে ২২০-এ। কর্মকর্তারা বলছেন, জিইর সঙ্গে অতিরিক্ত ইঞ্জিন সরবরাহের জন্য আরো একটি ফলো-অন চুক্তি সইয়ের আশা করছেন।
ইউটি/টিএ