নুরু-নাহিদরা কি চমক দেখাতে পারবেন- প্রশ্ন রনির

নুরুল হক নুর-নাহিদ ইসলামরা চমক দেখাতে পারবেন কি না- এমন প্রশ্ন করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেছেন, ‘গণ অধিকার পরিষদ ও জাতীয় নাগরিক পার্টি বাংলাদেশের দুটি নবীন রাজনৈতিক দল। এ দুটি রাজনৈতিক দল একত্র হচ্ছে এবং এই রাজনৈতিক দলের তরুণদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ইতিমধ্যে স্টার হয়ে গেছেন। তারা একত্র হয়ে একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম গঠন করার চেষ্টা করছেন।

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া এক ভিডিওতে রনি বলেন, ‘অল্প সময়ের মধ্যে এনসিপির ১০-১২ জন লোক বাংলাদেশের রাজনীতিসচেতন মানুষদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছেন এবং ওনারা সবাই শিক্ষিত, স্মার্ট কথাবার্তা বলেন এবং দেশের প্রথম সারির যেসব রাজনৈতিক নেতা রয়েছেন, তাদের সঙ্গে গত এক বছরে তারা যে পাশাপাশি বসে এসেছেন, কথাবার্তা বলেছেন; কোনো অবস্থায়ই তাদের হীনম্মন্য মনে হয়নি। তারা এই মুহূর্তে যে ডিগনিটি ধারণ করছেন, ঠিক সেইম পরিমাণ ১০-১২ জন লোক অন্য রাজনৈতিক দলে আপনি এভাবে খুঁজে পাবেন না। বিএনপিতে হাতে গোনা কয়েকজন। আওয়ামী লীগে তো কেউ নেই।

জামায়াতে আপনি কার নাম বলতে পারবেন, সেটি খুব কম?’ ‘যদিও এখনো কাগজে-কলমে আসেনি যে নুরু-রাশেদের সঙ্গে বাকি এনসিপির যেসব নেতা আছেন, তাদের একটা রাজনৈতিক প্ল্যা টফরম তৈরি হবে। তবে এটাকে কেন্দ্র করে সামনে যে নির্বাচন, সেখানে কী ফলাফল হবে এগুলো জানা দরকার। আমার কাছে মনে হচ্ছে, যে অবস্থার মধ্য দিয়ে নুর প্রতিষ্ঠা পেয়েছিলেন, তার পেছনে বহু মানুষের হাত ছিল। কিন্তু বিভিন্ন কারণে নুরের যে ইমেজ সেটা ক্ষুণ্ণ হয়ে গেছে।

সর্বশেষ জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে যে ঘটনা ঘটল, তাতে তিনি মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে অনেক দিন হাসপাতালে থাকলেন। আর এখন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে গেছেন।’
‘অন্যদিকে নাহিদ-হাসনাতদের ২০২৪ সালজুড়ে যে ইমেজ ছিল, সেই ইমেজ নানা কারণে শেষ হয়ে গেছে। এখানে সারজিস বা হাসনাতদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আসেনি, কিন্তু নাহিদ নিজে দুর্নীতি না করলেও তার পিএস, এপিএস, তার বাবার ভীষণ রকম বদনাম আছে। তারপর আখতার সম্পর্কেও নানা রকম বদনাম আছে।

এরপর আসিফ মাহমুদ সম্পর্কে আরো অনেক বেশি বদনাম আছে। তো এই বদনামের কারণে সরকারের সঙ্গে তাদের একটা বিরাট দূরত্ব তৈরি হয়ে গেছে। সেই দূরত্বের কারণে এখন তারা না রাজপথে, না তারা যমুনাতে, না তারা সচিবালয়ে। কোথাও তারা নিরাপদ নন। এমনকি শাহবাগে রাত ১০টার সময় তারা দুই-তিনজন লোক একা দাঁড়িয়ে থাকবেন, এই পরিস্থিতি এখন আর তাদের নেই। এটাই বাস্তবতা, এখন এই বাস্তবতায় দুটো দল এনসিপি এবং গণ অধিকার।’

‘তাদের যে মূল কক্ষপথ, সে কক্ষপথ থেকে তারা আলাদা হয়ে গেছেন। নুর যে কক্ষপথে, সে কক্ষপথটা আওয়ামী লীগ জমানাতে একভাবে ছিল। গত এক বছরে সেটা তিনটা বাঁক নিয়েছে। প্রথমত, তিনি বিএনপির সঙ্গে ছিলেন। তারপর সেখান থেকে জামায়াতের সঙ্গে এবং চরমোনাই পীরের যে সংগঠন সেখানে তিনি আসার চেষ্টা করেছেন। তারপর আবার কাউকে কোনো কিছু না বলে তিনি জাতীয় পার্টির অফিসে যে অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন, বলা হয়ে থাকে যে এর পেছনে সুদূরপ্রসারী হাত আছে। তাকে আক্রমণ করা, তার লোকদের পেটানো, তার অফিস আক্রমণ করা। এর পেছনে চলমান রাজনৈতিক মদদ আছে এবং এটা নিঃসন্দেহে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নয়। মানে তারই আপনজন। এটা বিএনপির হতে পারে, জামায়াতের হতে পারে, সেনাবাহিনীর লোক হতে পারে, ড. ইউনূসের লোক হতে পারে।’

‘তার দলকে যেভাবে শেষ করে দেওয়া হয়েছে এখান থেকে আসলে রিভাইভ করার ১% সম্ভাবনা থাকে। অন্যদিকে নাহিদরাও কিন্তু কক্ষচ্যুত হয়েছেন। তাদের যে দাপট ছিল, সেই জায়গাটা এখন আর নেই এবং সেখান থেকে এই দুটি দল, যারা হতাশাগ্রস্ত এবং ইতিমধ্যে অতিরিক্ত বদনাম কামিয়ে ফেলেছে; এই দুটি দল একত্র হয়েছে। এ ক্ষেত্রে ভালো ফলাফল আসার সম্ভাবনা ১ শতাংশও না।’ 

এসএস/টিএ

Share this news on:

সর্বশেষ

img
মিস ইন্টারন্যাশনালে বাংলাদেশের জেসিয়া ইসলাম Nov 14, 2025
img
ছেলে হত্যার ঘটনায় মামলা করলেন বিচারক Nov 14, 2025
img
বাংলাদেশকে ৮-০ গোলে হারল পাকিস্তান Nov 14, 2025
img
জাপানকে চীনের কড়া বার্তা Nov 14, 2025
img
দেশ বদলাতে প্রয়োজন নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত : সাকী Nov 14, 2025
img
নির্বাচনের আগে শিক্ষকদের দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ার আহ্বান নুরের Nov 14, 2025
img
কলকাতা টেস্টের প্রথম দিনে শক্ত অবস্থানে ভারতের Nov 14, 2025
img
দিনাজপুরে খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু Nov 14, 2025
img
জীবদ্দশায় আর কোনো রাজনৈতিক দল করব না : লতিফ সিদ্দিকী Nov 14, 2025
img
বিয়ে করছেন জনপ্রিয় নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী Nov 14, 2025
img
২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৪৬০ Nov 14, 2025
img
৪ দিনের ব্যবধানে মেহেরপুরের জেলা প্রশাসকের বদলি Nov 14, 2025
img
শাকিবের নায়িকা হতে যাচ্ছেন হানিয়া আমির! Nov 14, 2025
img
আমার কাজ ইউটিউবে দেখানোর জন্য নয় : শাবনূর Nov 14, 2025
img
বিশ্বকাপে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় রোনালদো Nov 14, 2025
img
আর্জেন্টিনাসহ ৪ দেশের ওপর থেকে শুল্ক প্রত্যাহারের নির্দেশ ট্রাম্পের Nov 14, 2025
img
সেনা মোতায়েন ল্যাটিন আমেরিকায়, 'অপারেশন সাউদার্ন স্পিয়ার' ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের Nov 14, 2025
img
ডিসেম্বরের প্রথম দিকে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন: দুলু Nov 14, 2025
img
বিশ্ববাজারে আবারও কমল স্বর্ণের দাম Nov 14, 2025
img
ঢাবিতে পুরুষ শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার Nov 14, 2025