নতুন করে তথ্য কমিশন গঠন না হওয়ায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ টিআইবির

কর্তৃত্ববাদের পতনের পর থেকে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময়ে নতুন করে তথ্য কমিশন গঠন না হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। পাশাপাশি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দিয়ে তথ্য কমিশন গঠন করে দীর্ঘদিনের অচলাবস্থা অবসানের দাবিও জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাষ্ট্র সংস্কারে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও তথ্য কমিশন কার্যকর করা ও তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োজনীয় সংস্কারের ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। নাগরিক সমাজ এ ব্যাপারে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি প্রদানসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সুপারিশ প্রদান করার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। জনগণের তথ্য জানার অধিকার রক্ষার প্রতি সরকারের এই দৃশ্যমান উদাসীনতা দুর্ভাগ্যজনক, যা এই সরকারের অন্যতম একটি ব্যর্থতা। সরকারের এ ব্যর্থতার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে কমিশন গঠনের আহ্বান জানাচ্ছি।

টিআইবি নির্বাহী পরিচালক বলেন, বর্তমানে তথ্য কমিশন না থাকায় জনগণের তথ্য সংক্রান্ত অভিযোগের শুনানি হচ্ছে না, সমাধানও মিলছে না। তথ্য কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং তথ্য অধিকার-বিষয়ক কার্যক্রমে মন্থর গতি জনগণের তথ্যপ্রাপ্তির অধিকারকে ব্যাহত করছে। ফলে সরকারি দপ্তরে তথ্য গোপনের প্রবণতা এবং স্বপ্রণোদিতভাবে তথ্য প্রকাশ না করার সংস্কৃতি অব্যাহত রয়েছে।

ড. ইফতেখারুজ্জামান অভিযোগ করেন, তথ্য অধিকার আইন পাস এবং তথ্য কমিশনের আত্মপ্রকাশের পরও কর্তৃত্ববাদী সরকারের সদিচ্ছার অভাব ও দৃশ্যমান অনীহার কারণে আইনটি কার্যকর হয়নি। অনেক সময় তথ্য কমিশনারদের মধ্যে দলীয় প্রভাবশালীরা নিয়োগ পাওয়ায় কমিশন তার কার্যকর ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠায় উল্লেখযোগ্য কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়নি।

বিবৃতিতে টিআইবি ১৫ দফা সুপারিশমালা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে– তথ্য অধিকার আইন যুগোপযোগী করতে সংশোধন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন; রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে আইনের আওতায় আনা; রাজনৈতিক দলের আয়-ব্যয়ের খরচ জনগণের জন্য উন্মুক্ত করা এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে তা প্রকাশ; বাকস্বাধীনতা ও ভিন্নমতের অধিকার নিশ্চিতের জন্য সব আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ; জনগণের ওপর অযাচিত নজরদারি কাঠামো বিলুপ্ত করা এবং তথ্য প্রকাশ ও তথ্যপ্রাপ্তির সুবিধার্থে ডিজিটাল টুলস সহজলভ্য করা এবং অবকাঠামো উন্নয়ন।

ইউটি/টিএ




Share this news on:

সর্বশেষ

১০ মিনিটে গোটা বিশ্বের সারাদিনের সর্বশেষ আলোচিত সব খবর Sep 28, 2025
২৭২ কিলোমিটার অবাধ প্রবাহ ইউরোপের ‘শেষ বন্য’ নদীর স্বীকৃতি পেল ভিওসা Sep 28, 2025
ক্ষমতায় গেলে তিন প্রতিজ্ঞার কথা জানালেন জামায়াতের আমির Sep 28, 2025
img
মিয়ানমারের নাগরিকদের জন্য মালয়েশিয়ায় ভিসামুক্ত প্রবেশের সুযোগ Sep 28, 2025
img
দুর্গাপূজার নিরাপত্তায় সজাগ থাকার আহ্বান ডাকসু ভিপির Sep 28, 2025
img
উড়তে থাকা লিভারপুলকে মাটিতে নামালো ক্রিস্টাল প্যালেস Sep 28, 2025
img
হাল্যান্ডের জোড়া গোলে বার্নলিকে উড়িয়ে দিলো ম্যানসিটি Sep 28, 2025
বন্ধুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন পাপন, কফিনে রেখে এলেন নিজের টুপি Sep 28, 2025
img
মাহমুদউল্লাহ ঝড়ো ইনিংস ছাপিয়ে চট্টগ্রামকে জেতালেন দিপু-জয় Sep 28, 2025
img
ভারতের বিপক্ষে আগ্রাসী হলেও হারিসদের থামাবেন না সালমান Sep 28, 2025
img
বেনাপোল দিয়ে ১০ দিনে ভারতে গেল ৯৯ টনের বেশি ইলিশ Sep 28, 2025
কে জিতবে ফাইনাল? ভারত নাকি পাকিস্তান! Sep 28, 2025
img
প্রাণহানিতে আমি অসহনীয় যন্ত্রণা ও শোকে কাতর : থালাপতি বিজয় Sep 28, 2025
img
নির্বাচন পর্যবেক্ষকের প্রাথমিক তালিকায় ৭৩ সংস্থা Sep 28, 2025
img
নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীকে নিজ জেলায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা, কুশপুত্তলিকা দাহ Sep 28, 2025
img
জাতিসংঘে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাকে বাথরুমে লাঞ্ছিতের অভিযোগ Sep 28, 2025
img
চলতি বছরেই হতে পারে ট্রাম্প-কিম বৈঠক Sep 28, 2025
img
সাজেকে আটকে পড়া পর্যটকরা সেনা নিরাপত্তায় খাগড়াছড়ি পৌঁছালেন Sep 28, 2025
img
বিমানবন্দরে আটকে দেওয়ার কারণ আজ জানাবেন সোহেল তাজ Sep 28, 2025
img
এশিয়ার দুই দেশের ওপর বড় নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র Sep 28, 2025