লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি বীর বিক্রম ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ বলেছেন, ‘শেখ হাসিনার মুদি প্রীতি এ দেশের জনগণকে অতিষ্ঠ করে ফেলেছে। মুদি কখনও বাংলাদেশের ভাল চায়নি। যে কারণে আমরা ভারতের হিন্দুদের বিরুদ্ধে নই, ভারতবাসীর বিরুদ্ধেও নই। কিন্তু বর্তমানে ভারতে যে সরকার আছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান।
যারা ভারতের দালালি করবে, আমরা তাদের বিরুদ্ধেও অবস্থান নিব।’
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে কুমিল্লার চান্দিনার মহিচাইর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা এলডিপির ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
কর্নেল অলি বলেন, ‘এস আলম বাংলাদেশের এক তৃতীংয়াশ সম্পদের মালিক। এস আলম তৈরি হয়েছে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার কারণে।
তিনি আমাদের দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে গেছেন। হাতে গোনা কয়েকজন ব্যক্তির কাছে বাংলাদেশের অর্ধেক ধন সম্পদ জব্দ আছে। হাসিনা তার পোষ্য লোকদেরকে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বানিয়েছেন। আর এ সবই হয়েছে ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মুদির কারণে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি পিআর মানে হচ্ছে প্রাইভেট রিলেশন। এ দেশে কোন প্রাইভেট রিলেশন হবে না। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে প্রার্থী নির্বাচিত হয়ে সংসদে যাবে। আর আপনার ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি যদি সংসদ সদস্য হয়, মন্ত্রী হয় তার মাধ্যমে আপনি সরকারে অংশ গ্রহণ করেছেন। প্রাইভেট রিলেশন হলে আপনার কোন অংশ গ্রহণ থাকবে না।’
এলডিপির এই শীর্ষ নেতা আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশকে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে। এখন দুর্গাপূজা চলছে, আপনারা পাহাড়া দেন। কারণ সংখ্যালঘুরা আমাদের আমানত।’
সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এলডিপির মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. রেদোয়ান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘এ দেশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমরা স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ভারতে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি। আমাদের জীবদ্দর্শায় এই স্বৈরাচারী এবং তার দল কোন দিন আর এ দেশে প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারবে না।’
ড. রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘সংস্কার ও বিচারের নামে নির্বাচনকে বাঁধাগ্রস্থ করতে বিশেষ বিশেষ রাজনৈতিক দল উঠেপড়ে লেগেছে। বিচার ও সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। চাইলেই কোন বিচার বা সংস্কার ছয় মাসে শেষ হবে না। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে বিচার কাজ শুরু হয়েছে। যেই সরকারই আসুক ওই বিচার কাজ চলবে।’
সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে কয়েকটি রাজনৈতিক দল জান্নাতের জন্য টিকেট বিক্রি করা শুরু করেছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের দলের নারী-পুরুষরা ভোট প্রার্থনা করে এবং তাদেরকে ভোট দিলে নাকি জান্নাতের টিকেট পাওয়া যাবে। তারা ধর্মের কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ধর্ম ব্যবসায়ীদের এ দেশের মানুষ কখনও স্থান দিবে না।’
উপজেলা এলডিপি সভাপতি একেএম সামছুল হক মাস্টারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন- এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য এড. ড. আওরঙ্গজেব বেলাল, দপ্তর সম্পাদক অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, উপজেলা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু তাহের, উপজেলা গণতান্ত্রিক স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি শাখাওয়াত হোসেন সাক্কু, গণতান্ত্রিক যুবদল কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি আমান সোবান, গণতান্ত্রিক ছাত্রদল কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী কামরুল হাসান ও নারায়ণগঞ্জ জেলা এলডিপি সভাপতি মো. বিল্লাল হোসেনসহ প্রমুখ।
পিএ/টিএ