টোকাই ইউটিউবারদের দুর্দিন চলছে : গোলাম মাওলা রনি

টোকাই ইউটিউবারদের দুর্দিন চলছে বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি। তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু ইউটিউবার, কিছু কিছু ফেসবুকার, যারা গত কয়েক বছর ধরে তাদের নিজেদের কণ্ঠস্বর এবং তাদের যে ফেইস এগুলো দিয়ে এই সমাজে প্রভাব বিস্তার করছে। আমি ইতিবাচক নেতিবাচক সবই বলছি। যেহেতু আমি নিজেও এখন কন্টেন্ট তৈরি করি।

তো তারা প্রভাব বিস্তার করছে, অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে, ঘৃণা ছড়াচ্ছে, সমাজের ভারসাম্য নষ্ট করছে, দেশকে বিদেশের হাতে তুলে দিচ্ছে, আবার বিদেশের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করছে। হোয়াটএভার মেবি নেগেটিভ পজিটিভ।’

‘এই ক্ষেত্রে ইউটিউবার যারা রয়েছেন তাদের একটা বিরাট ভূমিকা গত কয়েক বছর ধরে আছে। তো এসব ইউটিউবারের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রবাসী ইউটিউবার, যাদেরকে আমাদের এই বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী এদেরকে টোকাই ইউটিউবার হিসেবে বা টোকাই হিসেবে যে ন্যারেটিভ তৈরি করেছে, এটা বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

‘তো এই টোকাই ইউটিউবাররা মানুষের জীবনে যে নেগেটিভিটি তৈরি করেছে, তাদের যারা নিয়োগকর্তা রয়েছে, তাদের অশ্লীলতা অশ্রাব্যতা সবগুলোকে পুঁজি করে গত কয়েক বছর ধরে তারা এই সমাজে সহিংসতা তৈরি করেছে। এর ফলে সমাজ তো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে; পাশাপাশি এই সমাজে বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ছিনতাই, রাহাজানি, মারামারি, কাটাকাটি, বিভেদ মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।’

রনি বলেন, ‘অবাক করা ব্যাপার হলো, আপনি যদি সবসময় নেতিবাচক কথা বলেন, যার মাধ্যমে অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তার চেয়ে আপনি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আপনার চেহারা নষ্ট হয়ে যাবে, চেহারার মধ্যে একটা শয়তানি ছাপ চলে আসবে, আপনি হাসলে মনে হবে একটা রাক্ষস হাসছে, আপনি মুখ কালো করলে মনে হবে একটি ভূত বা একটা প্রেত আপনার মুখের ওপর ভর করেছে।

আপনি হিন্দু হন অথবা মুসলিম হন, মানুষের চেহারা কখনো পশুর মতো হয় না। মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। কিন্তু মানুষ যখন নেতিবাচক কথা বলে, নেতিবাচক চিন্তা করে এবং কুকর্ম করে, তখন তাদের চেহারার যে স্বাভাবিক লাবণ্যতা এটা নষ্ট হয়ে যায়। তাদেরকে দেখলে আপনার মনে হবে একটা পশু আসছে। একটা পশু হাসছে।

একটা পশু নাচছে। এরকম অবস্থা তৈরি হয়। এখন সেটা যেই হোক না কেন এটা ইউনিভার্সাল।’

তিনি বলেন, ‘কমলাপুর স্টেশনের আশেপাশে, কড়াইল বস্তির আশেপাশে, অপরাধপ্রবণ এলাকা মোহাম্মদপুর, ডেমরা এ সব এলাকাতে এক ধরনের ভয়ঙ্কর টোকায় দেখতে পাবেন। তো এই যে টোকায় যারা ভয়ঙ্কর তাদের চাইতেও অনলাইনের কিছু অ্যাক্টিভিস্ট ভয়ঙ্কর হয়ে গেছে। তাদের যে নির্মমতা, অশ্লীলতা, মন্দ কাজগুলো ওই টোকাইদেরকে অতিক্রম করে ফেলেছে। এ জন্য বাংলাদেশের অনেক সাংবাদিক এখন এদেরকে টোকাই হিসেবে অভিহিত করে।’

‘সেই টোকাইদের গত তিন মাস ধরে দুরবস্থা চলছে। কারণ তারা আগে যে ভাষায় কথা বলতো, এখন তাদের কথা পরিবর্তন হয়ে গেছে। যে প্রভুদের নির্দেশে তারা কাজ করতো; কারো বেতন ছিল মাসে ৫০০ ডলার, আর সর্বোচ্চ যে বড় টোকাই তার বেতন ছিল ৯৫০ ডলার। এর চেয়ে বেশি না। তো এই সামান্য বেতন নিয়ে তারা আল্লাহকে অস্বীকার করেছে, মিথ্যা বলেছে এবং তাদের নিয়োগকর্তা বা প্রভুর হুকুমে তারা প্রতিপক্ষের জীবন তচনছ করে দেওয়ার জন্য যত মিথ্যাচার রয়েছে, সেই কাজগুলো তারা করেছে। কিন্তু এ সব টোকাই যারা তাদের জন্য এই কাজগুলো করেছে, এই কাজ করতে গিয়ে অনেকের পরিবার নষ্ট হয়ে গেছে।’

‘কারণ, তাদের প্রভু আর অতীতের মতো তাদেরকে টাকা দিতে পারছে না। বট বাহিনীকেও টাকা দিতে পারছে না বা দিচ্ছে না। আর এ ধরনের টোকাই যারা ইউটিউবার রয়েছে তাদেরকেও টাকা পয়সা দিচ্ছে না। ফলে এ সব মানুষ ভয়ানক অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। আর সেই অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচার জন্য তারা এখন অনেকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে লাইন দেওয়ার চেষ্টা করছে।’

‘এই কারণে তাদের কথাবার্তা, চেহারা, সুর সব এলোমেলো হয়ে গেছে। গত এক মাসের মধ্যে যদি আপনি টোকাই ইউটিউবার বা টোকাই বটবাহিনীর গালাগাল এবং তাদের কর্মকাণ্ড দেখেন, দেখবেন যে গত চার পাঁচ বছর ধরে তারা যে ধারাবাহিকতা রক্ষা করেছিল এটা এখন এলোমেলো হয়ে গেছে। তারা পথ হারিয়ে ফেলেছে এবং তারা একসময় যাদের জন্য জীবন দিত তাদেরকে এখন গালাগাল করছে। আর একসময় যাদের বিরুদ্ধে গালাগাল তারা করছে এখন তাদেরকে ছলে বলে তারা প্রশংসা করার চেষ্টা করছে এবং তাদের সঙ্গে মেশার চেষ্টা করছে।’ 

এমআর/টিকে 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
১৪ ডিগ্রিতে তেঁতুলিয়ার তাপমাত্রা, আসছে শৈত্যপ্রবাহ Nov 19, 2025
img
২৫ নভেম্বর থেকে চালু হচ্ছে ঘরে বসে মেট্রোরেলের কার্ড রিচার্জ Nov 19, 2025
img
আনসার-ভিডিপি ব্যাংক থেকে দুই কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় দুদকের মামলা Nov 19, 2025
img
বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করল দেড় লাখ জনসংখ্যার দেশ কুরাসাও Nov 19, 2025
img
দেশে ফিরেছেন আলী রীয়াজ Nov 19, 2025
img
পটুয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেন নুর Nov 19, 2025
img
ভেনেজুয়েলায় হস্তক্ষেপ করলে ট্রাম্পের রাজনৈতিক জীবনের ইতি ঘটবে : মাদুরো Nov 19, 2025
img
এটা তোমার জয় নয়, অভিশপ্ত জীবনের শুরু : জিতু Nov 19, 2025
img

বাংলাদেশ-আয়ারল্যান্ড টেস্ট সিরিজ

বাংলাদেশ একাদশে দুই পরিবর্তন Nov 19, 2025
img
সিঙ্গাপুর থেকে এক কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার Nov 19, 2025
img
শেখ হাসিনার পোর্ট্রেটে ফ্যাসিবাদের কালিমা : গোলাম মাওলা রনি Nov 19, 2025
img
ভারত থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরছেন পাচার হওয়া ৩০ নারী-পুরুষ Nov 19, 2025
img
টম ক্রুজকে শুভেচ্ছা জানালেন অনিল কাপুর Nov 19, 2025
img
ছোট নায়িকার সঙ্গে রোমান্স, বয়স নিয়ে সমালোচনার জবাব দিলেন রণবীর Nov 19, 2025
img

সিএ প্রেস উইং ফ্যাক্টস

ওয়াজ মাহফিল নিয়ে জেলা প্রশাসকরা প্রধান উপদেষ্টাকে কোনো পরামর্শ দেননি Nov 19, 2025
img
কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের ৩ নতুন নির্দেশনা ফেসবুকের Nov 19, 2025
img
জামায়াত আমিরের সঙ্গে বিশ্বব্যাংক প্রতিনিধিদের বৈঠক Nov 19, 2025
img
ফের কমল স্বর্ণের দাম, আজ থেকে কার্যকর Nov 19, 2025
img
আমরা অস্থিরতার মধ্যে বাস করছি : মির্জা ফখরুল Nov 19, 2025
img
করণ জোহরের হরর মুভিতে জুটি বাঁধছে ওয়ামিকা-ভুবন Nov 19, 2025