ফ্লাইটে পাওয়ার ব্যাংকের ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইন্স। গতকাল বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এক বার্তায় এমিরেটস যাত্রীদের জানায়, এমিরেটস সব বিমানের সিটের পাশে চার্জিং সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে, দীর্ঘ সময়ের ফ্লাইটের ক্ষেত্রে যাত্রীদের ডিভাইসগুলো সম্পূর্ণ চার্জ করে নিয়ে আসার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এমিরেটস জানায়, যাত্রীরা প্লেনে ১০০ ওয়াট আওয়ারের নিচের পাওয়ার ব্যাংক বহন করতে পারবেন। তবে, এটি দিয়ে প্লেনের ভেতরে কোনো ডিভাইস চার্জ করা যাবে না, কোনো ডিভাইস দিয়ে পাওয়ার ব্যাংকও চার্জ দেওয়া যাবে না। বিমানের ওভারহেড স্টোরেজ বিনে (কেবিন ব্যাগেজ রাখার জায়গা) পাওয়ার ব্যাংক রাখা যাবে না, এটি অবশ্যই সিটের পকেটে অথবা সামনের সিটের নিচে রাখা ব্যাগে রাখতে হবে। এছাড়া, আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাওয়ার ব্যাংক চেক-ইন লাগেজে বহনও করা যাবে না।
এমিরেটস জানায়, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যাত্রীদের পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহারের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে বৈশ্বিক এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রিতে লিথিয়াম ব্যাটারি-সম্পর্কিত ঘটনার সংখ্যাও বেড়েছে। যদি ব্যাটারি অতিরিক্ত চার্জ হয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে ‘থার্মাল রানঅ্যাওয়ে’ হতে পারে।
থার্মাল রানঅ্যাওয়ে হলো এমন একটি স্ব-ত্বরান্বিত প্রক্রিয়া, যেখানে ব্যাটারির ভেতরে উৎপন্ন তাপ তার নিজের শীতল হওয়ার ক্ষমতাকে ছাড়িয়ে যায়, ফলে দ্রুত ও নিয়ন্ত্রণহীনভাবে তাপমাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে অগ্নিকাণ্ড, বিস্ফোরণ এবং বিষাক্ত গ্যাস নির্গমনের মতো ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে।
বেশিরভাগ ফোন এবং উন্নত লিথিয়াম ব্যাটারি-চালিত ডিভাইসে একটি অভ্যন্তরীণ ‘ট্রিকল সিস্টেম’ থাকে, যা ব্যাটারিকে অতিরিক্ত চার্জ হওয়া থেকে রোধ করার জন্য ধীরে ধীরে কারেন্ট প্রবাহিত করে। কিন্তু অনেক সাধারণ পাওয়ার ব্যাংকে এই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নাও থাকতে পারে, যা ঝুঁকি বাড়ায়। এমিরেটসের বিমানে বহন করা সব পাওয়ার ব্যাংক নতুন নিয়মের আওতায় আসবে।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এমিরেটসের নতুন নিয়মগুলো বিমানে পাওয়ার ব্যাংক সংক্রান্ত ঝুঁকি অনেকটাই কমিয়ে আনবে। কেবিনের ভেতরে সহজে পৌঁছানো যায় এমন জায়গায় পাওয়ার ব্যাংক সংরক্ষণ করা হলে, যদি কোনো বিরল অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাও ঘটে, তবে প্রশিক্ষিত কেবিন ক্রুরা দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এবং আগুন নেভাতে সক্ষম হবেন।
আইকে/টিএ