বিগত সরকারেরে আমলে তৈরি হওয়া রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট জনগণের মতামত ছাড়াই হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ ব্যাপারে বন মন্ত্রণালয়কে চাপ প্রয়োগ করে বনভূমি ছাড়তেও বাধ্য করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা।
রোববার (৫ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেক ক্যাসলে রিজনাল ইনফ্র্যাসট্রাকচার মনিটরিং অ্যালাইয়েন্স কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, রামপাল পাওয়ার প্ল্যান্ট আলোচনা ছাড়া, জনগণের মতামত ছাড়াই হয়েছে। এমনকি সরকার বন মন্ত্রণালয়কে চাপ দিয়ে বনভূমি ছাড়তেও বাধ্য করেছে। এটাই কি গণতন্ত্র? আমরা কি ‘না’ বলার অধিকার হারিয়ে ফেলেছি?
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানান, শেষ এক দশকে ঋণ, মুদ্রাস্ফীতি আর ভুল বিনিয়োগ জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিলো যা কখনও শোধরানো হয়নি। জনগণের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই বিদেশি বিনিয়োগ আসায় দেশের নিরাপত্তা, পরিবেশ, বন সব কিছুই অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।
পরিবেশ, জনগণের অধিকার এবং জবাবদিহিতার সমান গুরুত্ব পেতে দেশে একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রয়োজন উল্লেখ করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রয়োজন একটি শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো। যেখানে পরিবেশ, জনগণের অধিকার এবং জবাবদিহিতা সমান গুরুত্ব পাবে। আমরা উন্নয়ন চাই, কিন্তু শর্তহীন না।
তিনি বলেন, আমরা বিদ্যুৎ চাই, কিন্তু পরিবেশ ধ্বংস করে না। আমরা বিনিয়োগ চাই, কিন্তু আমাদের কথার দাম দিয়ে। আজ বাংলাদেশ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা চাই একটি রূপান্তরমূলক এজেন্ডা, যেখানে জনগণ থাকবে কেন্দ্রে। নয়তো এই উন্নয়ন হবে একতরফা, নিঃস্বার্থ নয়।
‘দেশে অবশ্যই বিদ্যুৎ প্রয়োজন, কিন্তু কখনোই পরিবেশকে ধ্বংস করে নয়। বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও জনগণের চাওয়া এবং চাহিদার মূল্য দেয়া উচিত। বিদেশি বিনিয়োগ তখনই টেকসই হয়, যখন তা জনগণের অংশগ্রহণ, স্বচ্ছতা এবং দায়বদ্ধতার সঙ্গে মিলে যায়। নয়তো তা শুধুই শোষণ হয়’, যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, আমার চোখে বিনিয়োগ মানে শুধু টাকা নয়—এটা মানে ক্ষমতার কাছে যাওয়া, অথবা ক্ষমতা কার হাতে থাকবে তা নির্ধারণ করা। যারা ক্ষমতার বাইরে, তাদের কাছে এই উন্নয়ন মানে ভয়, অনিশ্চয়তা।
ইএ/টিকে