ভুলবশত মাসিক বেতনের ৩৩০ গুণ অর্থ ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ায় সঙ্গে সঙ্গেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন চিলির এক অফিস সহকারী। তিনি মোট প্রায় ১ লাখ ২৭ হাজার পাউন্ড (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা) হাতে পান, যেখানে তাঁর মাসিক বেতন ছিল মাত্র ৩৮৬ পাউন্ড। এই অপ্রত্যাশিত 'বাম্পার' বোনাস পাওয়ার পর তিনি শুধু ইস্তফাই দেননি, নিয়োগকর্তা প্রতিষ্ঠানের ফোন ধরাও বন্ধ করে দেন।
দীর্ঘ তিন বছর ধরে চলা আইনি প্রক্রিয়ার পর আদালত রায় দিয়েছেন যে এই ঘটনাটি চুরি নয়, বরং 'অনুমোদনহীন প্রাপ্তি' হিসেবে গণ্য হবে। ফলে এটি ফৌজদারি মামলা হিসেবে বিচারযোগ্য নয় বলে রায় দিয়েছেন বিচারক।
ঘটনাটি ২০২২ সালের মে মাসের। চিলির খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ড্যান কনসরসিও ইন্ডাস্ট্রিয়াল দে আলিমেন্তোস দে চিলের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন ওই ব্যক্তি। বেতন বিতরণে এক ত্রুটির কারণে তাঁর অ্যাকাউন্টে ভুলবশত বিশাল অঙ্কের অর্থ জমা হয়।
কোম্পানি ভুল বুঝতে পেরে যোগাযোগ করলে কর্মীটি প্রথমে সমুদয় অর্থ ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তিন দিন পরই তিনি চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে কর্মস্থল ও বসের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এরপর কোম্পানিটি তাঁর বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করে।
তিন বছর আইনি লড়াই চলার পর বিচারক রায় দেন, যেহেতু কোম্পানি নিজের ভুলবশত অর্থটি কর্মীর অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েছে, তাই এটি চুরি নয়। বরং এটি অনুমোদনহীন প্রাপ্তি হিসেবে বিবেচিত হবে, যা ফৌজদারি মামলার আওতায় পড়ে না।
যদিও এই রায়ে ওই ব্যক্তি ফৌজদারি অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেলেন, তবে নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, তারা হাল ছাড়ছে না। দিয়ারিও ফিনান্সিয়েরো পত্রিকাকে দেওয়া এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি বলেছে, তারা দেওয়ানি আদালতের মাধ্যমে ওই অর্থ উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাবে।
এই ঘটনার পাশাপাশি, ইউরোপে আরেকটি চাঞ্চল্যকর বেতন-সংক্রান্ত ত্রুটির ঘটনা সামনে এসেছে। ভাইস নিউজ-এর খবর অনুযায়ী, জার্মানির এক শিক্ষিকা গত ১৬ বছর ধরে অসুস্থতার অজুহাতে ঘরে বসে আছেন, অথচ নিয়মিত সম্পূর্ণ বেতন নিচ্ছেন। এই সময়ে তিনি মোট ১১ লাখ ৭০ হাজার ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৩ কোটি ৭০ লাখ টাকা) পকেটস্থ করেছেন।
সম্প্রতি নতুন প্রশাসকের নির্দেশে তদন্ত শুরু হলে এই বিষয়টি ফাঁস হয়। ওই শিক্ষিকাকে যখন অসুস্থতার প্রমাণ দিতে বলা হয়, তখন তিনি উল্টো নিজের নিয়োগকর্তার বিরুদ্ধেই আইনি ব্যবস্থা নিয়েছেন।
আইকে/টিকে