জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, আমাদের দেশের সরকারগুলোর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় খুব দ্রুত। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শো অনুষ্ঠানে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি এ কথা বলেন।
মাসুদ কামাল বলেন, ‘যারা সরকারে থাকে তারা মনে করে তারা যেটা দেখছে, যেভাবে দেখছে সেটাই প্রকৃত দেখা, অন্যকিছু দেখা না। তারা জনগণ থেকে এতটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে যে তারা যেভাবে ভাবছে এটাই জনগণের চিন্তা। আমাদের দেশের সরকারগুলোর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এখানে- তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় খুব দ্রুত।’
সম্প্রতি ঢাকার একটি গোলটেবিল বৈঠকে প্রেসসচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল। মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে চিত্র গণমাধ্যমে দেখা যায়, বাস্তবতা তার চেয়ে অনেক ভালো। বাংলাদেশের মানবাধিকার প্রতিবেদনের একটা বড় সমস্যা হলো পত্রিকাগুলোর রিপোর্টের ওপর নির্ভর করা। যে পত্রিকার রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়, সেই রিপোর্ট কতটা বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরযোগ্য, সেই প্রশ্ন তোলেন তিনি।’
তার এই মন্তব্যের প্রসঙ্গে মাসুদ কামাল বলেন, ‘আমি যেন শুনতে পাচ্ছি হাসান মাহমুদ কথার প্রতিধ্বনি। হাসান মাহমুদ, ওবায়দুল কাদের তাদের প্রতিধ্বনি শুনতে পাচ্ছিলাম। উনি (প্রেসসচিব) শেষ করেছেন এভাবে— উচিত হবে এ ব্যাপারে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতো আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবেদন দেওয়া।’
মাসুদ কামাল আরো বলেন, ‘আল্লাহর কী রহমত পরের দিনই হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এই প্রতিবেদনটা দিয়েছে।’
মাসুদ কামাল বলেন, ‘প্রতিবেদনে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এশিয়া অঞ্চলের উপপরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী বলেন, বাংলাদেশ সরকারের সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অপব্যবহার বন্ধ করা উচিত। আইনটি রাজনৈতিক দমনপীড়নের সমার্থক হয়ে উঠছে। আইনটার পরিবর্তে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপদ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরিতে মনোযোগ দেওয়া উচিত। যাদের কাছ থেকে প্রতিবেদন আশা করেছিলেন আমাদের প্রেস সেক্রেটারি সাহেব, এটা হলো তাদের বক্তব্য।’
মাসুদ কামাল বলেন, ‘যারা সরকারে থাকে তারা মনে করে যে তারা যেটা দেখছে, যেভাবে দেখছে এটাই প্রকৃত দেখা, অন্যকিছু দেখা দেখা না। তারা জনগণ থেকে এতটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যে, তারা বিশ্বাস করতে শুরু করে, তারা যেভাবে ভাবছে এটাই জনগণের চিন্তা। আমাদের দেশের সরকারগুলোর সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এখানে। তারা জনবিচ্ছিন্ন হয়ে যায় খুব দ্রুত।’
তিনি আরো বলেন, ‘এই শফিকুল আলম তো একসময় সাংবাদিক ছিলেন, মানুষের সঙ্গে মিশতেন। এত দ্রুত কিভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেন এই দেড় বছরের ক্ষমতায়?’
কেএন/টিকে