ভারত যা বলছে, বাংলাদেশ তাই মেনে নিচ্ছে: আনু মুহাম্মদ

অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, অভিযোগ করলে প্রধানমন্ত্রী উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি বলেছেন তথ্যপ্রমাণ ছাড়া অভিযোগ না করতে। সুন্দরবন বিনাশী রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র কেন জাতীয় স্বার্থবিরোধী, তথ্য-প্রমাণসহ বহুদিন ধরে সেকথা আমরা বলে আসছি। তিনি কর্ণপাত করেননি। বর্তমানে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ভারত যা ইচ্ছা প্রকাশ করছে, বাংলাদেশ তাই মেনে নিচ্ছে। সর্বোপরি বাংলাদেশ একটি বন্দিশালায় পরিণত হয়েছে।

‘শেখ হাসিনা-নরেন্দ্র মোদির মধ্যকার চুক্তি ও সমঝোতা: বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার পুরানা পল্টনে মুক্তি ভবনের প্রগতি সম্মেলন কক্ষে বামজোট এই সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন বামজোটের সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ আল ক্বাফি রতন।

দেশের উপকূলীয় অঞ্চল সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ভারতের রাডার স্থাপন নিয়ে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘এতদিন তিনদিকে ছিল কাঁটাতার। এখন সমুদ্র উপকূল নিয়ন্ত্রিত হবে ভারতের রাডার দিয়ে। উপকূলীয় অঞ্চলের সাথে বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রশ্ন জড়িয়ে আছে।’

তেল-গ‌্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ‌্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস‌্য সচিব আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘মার্কিন ‘ওয়ার অন টেরর’ বুলিকে অবলম্বন করে ভারত সারা দক্ষিণ এশিয়ায় যে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলছে, তারই অংশ হিসেবে বাংলাদেশ একের পর এক সামরিক চুক্তি করে যাচ্ছে।’

‘পেশাদারিত্ব, কূটনৈতিক দক্ষতা-অভিজ্ঞতার ঘাটতি থাকলে তা পূরণ করা যায়। কিন্তু সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই যদি হয় ভারতের আজ্ঞাবহ হয়ে থাকা, তাহলে রাষ্ট্র ক্ষমতার পরিবর্তন ছাড়া জাতীয় স্বার্থ রক্ষা সম্ভব না।’

দেশের বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে ভারত সহযোগিতা করেছে তার জন্য আমরা ভারতের কাছে কৃতজ্ঞ। তার মানে এই না ভারত যা চায় যুক্তি-চিন্তাহীনভাবে সব দিয়ে দিতে হবে।’

‘সব সময়ই বুদ্ধিবৃত্তিকরা সমাজে-রাষ্ট্রে চিন্তা, রাজনীতির গতিমুখ তৈরি করে। সেই বুদ্ধিবৃত্তিকরাই এখন সরকারের তাবেদার হয়ে উঠেছে। এর ফলেই সমাজে প্রতিক্রিয়াশীলতা বেড়ে চলেছে।’

আরেক অর্থনীতিবিদ এম এম আকাশ বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ভারতীয় পুঁজির হোমল্যান্ডে পরিণত হয় তবে তার সাথে আমাদের জাতীয় পুঁজি কখনই পেরে উঠবে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ক্রমাগত সেদিকেই হাঁটছি।’

গোলটেবিল আলোচনায় আরও আরও বক্তব্য দেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদের (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় নেতা শ্রভ্রাংশু চক্রবর্তী, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, গণসংতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বাচ্চু ভুঁইয়া, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফয়জুল হাকিম প্রমুখ।

 

টাইমস/এসআই

 

Share this news on:

সর্বশেষ

img
চট্টগ্রামে জাতীয় বাস্কেটবল প্রতিযোগিতা শুরু আজ Nov 09, 2025
img
বিএনপিতে স্বার্থান্বেষী মহল ঢুকে পড়েছে, তারা বিভাজনের চেষ্টা করছে: ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী Nov 09, 2025
img
ইসলামিক গেমসে ভারত্তোলনে ব্রোঞ্জ জিতল বাংলাদেশ Nov 09, 2025
এই চিড়া আপনি এখনই খান! অপরিচ্ছন্নতায় ভরা মহসীন হলের দোকান Nov 09, 2025
রাজনীতি ও অর্থনীতিতে মতুয়া সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহবান জানালেন আমীর খসরু Nov 09, 2025
কেন জামায়াত বাদে সব ইসলামী দলকে এক হওয়ার আহ্বান হেফাজত আমিরের? Nov 09, 2025
জুলাইয়ের মাধ্যমে তৈরি হওয়া জেনারেশন কাউকে ভয় পায়না-সাদিক কায়েম Nov 09, 2025
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ্যে যা বললেন গয়েশ্বর চন্দ্র Nov 09, 2025
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন না হলে আবারও এক-এগারোর শঙ্কা রাশেদের Nov 09, 2025
নিবন্ধন ও ‘শাপলা কলি’ প্রতীক পাওয়ায় হাসনাতের এলাকায় এনসিপির আনন্দ শোভাযাত্রা Nov 09, 2025
img
বিএনপির সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রতিশ্রুতি শহীদ পরিবারের সদস্যদের Nov 09, 2025
জামায়েতের কারনে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসেছিল Nov 09, 2025
বিএনপি আলোচনায় বসতে রাজি নয়, জানালেন জামায়াত নেতা Nov 09, 2025
শাকিবের প্রতি মিনিটের দাম পৌনে দুই লাখ টাকা! Nov 09, 2025
img
নেত্রকোনায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাত নেতাকর্মী আটক Nov 09, 2025
img
নতুন আলোয় আলোকিত হচ্ছে বাংলাদেশ : শারমীন এস মুরশিদ Nov 09, 2025
img
ঢাকার নতুন ডিসি শফিউল আলম Nov 09, 2025
img
সৎ থাকলে সাফল্য আসবেই, বিশ্বাস শুভশ্রীর Nov 09, 2025
img
তারা ঐকমত্য কমিশনে গুন্ডামি করেছেন: সামান্তা শারমিন Nov 09, 2025
img
বিচারিক প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হবে আ.লীগ-জাপা: নুর Nov 09, 2025