কয়েক সপ্তাহের দুঃসময় কী দারুণভাবেই না পেছনে ফেলল লিভারপুল! হতাশাময় পথচলায় এবারও ম্যাচের শুরুতে পিছিয়ে পড়ে তারা। সেই ধাক্কা সামলে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়াল দলটি। তাদের আক্রমণের তোড়ে ভেসে গেল আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট।
জার্মান ক্লাবটির মাঠে বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ম্যাচটি ৫-১ গোলে জিতেছে আর্না স্লটের দল।
উগো একিটিকের নৈপুণ্যে এগিয়ে যাওয়ার পর, ভার্জিল ফন ডাইক ও ইব্রাহিমা কোনাতের গোলে প্রথমার্ধেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় লিভারপুল।দ্বিতীয়ার্ধে তাদের বাকি দুটি গোল করেন কোডি হাকপো ও দমিনিক সোবোসলাই।
দুর্দান্ত জয়ের পর তিন ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দশম স্থানে উঠেছে লিভারপুল।
তিন ম্যাচে শতভাগ সাফল্যে ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে পিএসজি। তাদের সমান পয়েন্ট বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলান, আর্সেনাল ও রেয়াল মাদ্রিদেরও।
দুই দলই জয়ে আসর শুরুর পরের ম্যাচে পেয়েছে হারের তেতো স্বাদ। সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে লিভারপুল তো আগের চার ম্যাচেই হেরেছে।
ফ্রাঙ্কফুর্টের সময়টাও সুখকর কাটছে না, তারা জয়ের দেখা পায়নি আগের তিন ম্যাচে।
ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসার অভিযানে দশম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ তৈরি করে লিভারপুল। আলেকসান্দার ইসাকের জোরাল কোনাকুনি শটটি যদিও ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
ম্যাচের শুরুতে বেশ আত্মবিশ্বাসী দেখা যায় ফ্রাঙ্কফুর্টকে। তারাই ২৬তম মিনিটে লক্ষ্যে প্রথম শট নিয়েই এগিয়ে যায়। মারিও গোটসের পাস ধরে ডি-বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শটে গোলটি করেন গাসমুস ক্রিস্টেনসেন। বল দূরের পোস্টে লেগে জড়ায়।
৩২তম আরেকটি সুবর্ণ সুযোগ হারায় লিভারপুল; কনর ব্র্যাডলির হেড ক্ষীপ্রতায় রুখে দেন গোলরক্ষক। বারবার সুযোগ নষ্টের হতাশা অবশ্য পরের ১০ মিনিটে তিনবার জালে পাঠিয়ে মুছে দেয় দলটি।
৩৫তম মিনিটে দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে সমতায় ফেরে লিভারপুল। অ্যান্ডি রবার্টসনের নিজেদের সীমানা থেকে বাড়ানো থ্রু বল ধরে, গতিতে সবাইকে পেছনে ফেলে ডি-বক্সে ঢুকে ওয়ান-অন-ওয়ানে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন একিটিকে।
এগিয়ে যেতেও দেরি করেনি লিভারপুল। প্রথম গোলের চার মিনিট পর কোডি হাকপোর কর্নারে লাফিয়ে হেডেব্যবধান দ্বিগুণ করেন ফন ডাইক।৪৪তম মিনিটে আরেকটি কর্নার পায় স্বাগতিকরা এবং তা থেকেই হেডে ব্যবধান বাড়ান ইব্রাহিমা কোনাতে।
দ্বিতীয়ার্ধেও প্রতিপক্ষের ওপর চাপ ধরে রাখে লিভারপুল। ৫৫তম মিনিটে ব্যবধান আরও বাড়তে পারতো; কিন্তু ফ্লোহিয়ান ভিয়েৎসের একটু বাঁকানো ফ্রি কিক কর্নারের বিনিময়ে আটকান গোলরক্ষক।
খানিক পর ফের ফ্রাঙ্কফুর্টের ডি-বক্সে ভীতি ছড়ায় লিভারপুলর। একিটিকে গোলরক্ষক বরারবর শট নেওয়ার পর, ফিরতি বল পেয়ে জোরাল শট নেন ব্র্যাডলি, সেটাও রুখে দেন গোলরক্ষক। তার বাধার পর বল ক্রসবারে প্রতিহত হয়।
ম্যাচের প্রথম ৬৪ মিনিটে গোলের জন্য লিভারপুলেল ১২ শটের ৯টিই লক্ষ্যে ছিল। পরের পাঁচ মিনিটে লক্ষ্যে আরও দুটি শট নিয়ে দুটিতেই সফল হয় তারা।
৬৬তম মিনিটে ভিয়েৎসের পাস ধরে ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয় প্রায় নিশ্চিত করে ফেলেন হাকপো। তিন মিনিট পর ডি-বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে দলের পঞ্চম গোলটি করেন সোবোসলাই।
ছন্দ খুঁজে ফেরা মোহামেদ সালাহকে ৭৪তম মিনিটে একিটিকের বদলি নামান কোচ স্লট। বাকি সময়ে মিশরের এই স্ট্রাইকারও স্কোরলাইনে নাম লেখানোর ভালো দুটি সুযোগ পান; কিন্তু কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।
এমআর