জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, আমার কেন যেন মনে হচ্ছে বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপির সম্ভবত এই মুহূর্তে মাইনকাচিপায় পড়ে গেছে। তিনি বলেন, বেশি ছাড় দেওয়ার মানসিকতার জন্য তারা এই মাইনকা চিপায় পড়ে গেছে।
মাসুদ কামাল বলেন, বিএনপি একটা বড় রাজনৈতিক দল এবং এই দলে অনেক বড় বড় নেতা আছেন এবং এই নেতারা সবাই মেধাবী বুদ্ধিমান। অন্য যেকোনো দলের চেয়ে রাষ্ট্রপরিচালনার ক্ষেত্রে তাদেরর অভিজ্ঞতা বেশি।
এমন একটা দল এরকম বেকায়দায় পড়বে এটা হয়তো অনেকে ভাবতে পারেননি।
তিনি বলেন, বেশি ছাড় দেওয়ার মানসিকতার জন্য তারা এই মাইনকা চিপায় পড়ে গেছে। আপনি কতটুকু ছাড় দিবেন, কতটুকু ছাড় দিতে পারবেন, এটা আপনাকে মাথায় রাখতে হবে। তার চেয়ে ও বড় কথা, আপনার প্রত্যেকটা কাজ আপনার নেতাকর্মী, সমর্থক এবং ভোটার যারা আছে, সবার কাছে ট্রান্সপারেন্ট হতে হবে।
এই যে ট্রান্সপারেন্ট না থাকা, তার ফল এখন বিএনপি দিচ্ছে। তিনি বলেন, এখন দেশে একটা আওয়াজ তোলা হচ্ছে যে আলোচিত জুলাই সনদ, মানে সংস্কার প্রক্রিয়া বিএনপি নাকি চায় না।
মাসুদ কামাল বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশন যেটা গঠিত হয়েছিল যেটা নিয়ে আমি বহু সমালোচনা করেছি, আমি বলেছি এটা যোগ্য লোকের হাতে পড়েনি এবং যোগ্য লোক তো দূরের কথা, এখন আমার কাছে মনে হচ্ছে যে এটা দুষ্ট লোকের হাতে পড়েছিল। এর সর্বশেষ প্রমাণ গত মঙ্গলবার তারা জুলাই সনদ কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে, তার সুপারিশ প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছেন।
এই সুপারিশটা দেখার পরেই বিএনপি বলেছে যে তারা এটাকে মেনে নিতে পারছে না এবং তারা এটাও বলেছে যে এর মাধ্যমে জাতির সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জুলাই জাতীয় সনদকে আসলে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটা ভাগ হলো জুলাই সনদ প্রণয়ন। অর্থাৎ জুলাই সনদের মধ্যে কী থাকবে, আগামীতে রাষ্ট্র কিভাবে চলবে, সংবিধানের চেহারা কেমন হবে, আমাদের সরকার কিভাবে চলবে, এইগুলো নিয়ে কিছু প্রস্তাবনা সিদ্ধান্ত হলো জুলাই সনদ। যেটা নাকি কিছুদিন আগে জাতীয় সংসদের সামনে বিএনপিসহ সবাই মিলে স্বাক্ষর করেছে।
আর এই সনদ কিভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে তার সুপারিশ গত মঙ্গলবার জমা দেওয়া হয়েছে। এটা দেখার পরেই বিএনপি তারা খুব দুঃখিত হয়েছে, উত্তেজিত হয়েছে; বলেছে, তাদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে, জাতির সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।
পিএ/টিএ