সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি ৮৪ বছর বয়সে মারা গেছেন বলে পরিবারের একটি বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে মঙ্গলবার জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো।
চেনি ছিলেন ৪৬তম ভাইস প্রেসিডেন্ট, যিনি ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের অধীনে দায়িত্ব পালন করেন।
মার্কিন মিডিয়া কর্তৃক উদ্ধৃত তার পরিবারের বিবৃতি অনুসারে, এই সাবেক কংগ্রেস সদস্য ও প্রতিরক্ষা সচিব ‘নিউমোনিয়া এবং হৃদযন্ত্র ও রক্তনালির জটিলতার কারণে মারা গেছেন’।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ‘কয়েক দশক ধরে, ডিক চেনি হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ, ওয়াইমিংয়ের কংগ্রেস সদস্য, প্রতিরক্ষা সচিব এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টসহ বিভিন্ন পদে থেকে আমাদের জাতির সেবা করেছেন।’
চেনিকে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে অন্যতম শক্তিশালী ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যিনি পর্দার আড়াল থেকে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তারকারী একজন ব্যক্তিত্ব ছিলেন।
১৯৪১ সালের ৩০ জানুয়ারি নেব্রাস্কার লিংকনে জন্মগ্রহণকারী চেনি তার শৈশবের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেন স্বল্প জনবসতিপূর্ণ পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য ওয়াইমিংয়ে।
তিনি ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করলেও ইস্ট কোস্টের এই মর্যাদাপূর্ণ স্কুল থেকে ঝরে পড়েন এবং শেষ পর্যন্ত নিজ রাজ্যে ওয়াইমিং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করেন।
একজন কট্টর রিপাবলিকান হিসেবে চেনি ১৯৭৮ সালে নিজেই রাজনীতিতে প্রবেশ করেন, হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ওয়াইমিংয়ের আসনটি জেতেন এবং পরবর্তী দশক ধরে সেই পদে অধিষ্ঠিত থাকেন।
১৯৮৯ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ কর্তৃক প্রতিরক্ষাসচিব নিযুক্ত হয়ে চেনি ১৯৯০-৯১ সালের উপসাগরীয় যুদ্ধের সময় পেন্টাগনের নেতৃত্ব দেন, যেখানে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোট ইরাকি সেনাদের কুয়েত থেকে বহিষ্কার করেছিল।
ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে চেনি তার নব্য-রক্ষণশীল মতাদর্শ হোয়াইট হাউসে নিয়ে আসেন এবং তার পূর্বসূরিদের তুলনায় বড় ধরনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আরো বেশি ভূমিকা পালন করেন।
২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে আল-কায়েদার নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটনে হামলার পর ইরাক আক্রমণের সিদ্ধান্তের পেছনে চেনিকে ব্যাপকভাবে অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে দেখা হয়।
সাদ্দাম হোসেনের কাছে গণবিধ্বংসী অস্ত্র থাকার বিষয়ে তার ভুল দাবিগুলো ২০০৩ সালে মার্কিন আগ্রাসনের আগে যুদ্ধের দামামা বাজাতে ইন্ধন জুগিয়েছিল।
আরপি/এসএন