বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, যারা আজকে ভোট নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে, যারা জনগণকে অধিকার থেকে দূরে রাখার ষড়যন্ত্র করছে, তারা কোনো অবস্থাতেই কামিয়াবি হবে না। কারণ সব ভোটার ঐক্যবদ্ধ।
শনিবার (৮ নভেম্বর) দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাটের পৌর ২ নং ওয়ার্ডে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থানীয় সুধী সমাজ, শ্রমজীবী, নারীসমাজ ও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ভোট নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র সফল হবে না। কারণ এখানের মা-বোনেরা, ভাইয়েরা শত কষ্টের মধ্যে, দুপুরের ভাত না খেয়ে অপেক্ষা করেছেন, সভায় উপস্থিত হয়েছেন। অর্থাৎ এদেশের মানুষ তাদের অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ। অধিকারটা কী? ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’।
নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে, যাতে কেউ বাধা দিতে না পারে। এ জন্য সব ভোটার ঐক্যবদ্ধ।
ভোটারদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার অধিকার আপনাকে আদায় করে নিতে হবে। আপনার অধিকার কেউ আপনাকে দিয়ে দেবে না।
আপনার অধিকার অনেকে ছিনিয়ে নিতে চাইবে, চুরি করার চেষ্টা করবে। কারসাজি করে বিনা ভোটে অথবা ভোট ছাড়াই রাতের বেলা আপনাদের প্রতিনিধি সাজতে চাইবে। এটি কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না। সেজন্য সজাগ থাকতে হবে। কোনো অবস্থাতেই মানুষের সস্তা কথায় মন ভুলালে চলবে না।
বিশেষ করে মা-বোনদের কেউ কেউ তালিম দেওয়ার কথা শুনলাম। যে অমুক মার্কায় সিল দিলে স্বর্গে যাওয়া যাবে। অথবা নরকে যেতে হবে। আচ্ছা বলেন তো, এই যে জোহরের নামাজ গেল, যারা নামাজ পড়েন তাদের এক ধরনের আমল হয়েছে, আর যারা নামাজ পড়েননি তাদের ভিন্নটা হয়েছে। আপনার যদি আমল না থাকে, তাহলে শেষ বিচারের দিন আপনি কিভাবে বা কে আপনাকে বাঁচাবে? দোজখ বলেন আর বেহেশত বলেন, সেটার মালিক তো মহান রাব্বুল আল-আমীন। ওইদিন এমন একদিন হবে, ছেলে তার বাবার কথা ভুলে যাবে, স্বামী তার স্ত্রীকে ভুলে যাবে। ওইদিন কোনো রাজনৈতিক দলের সিল কাজে দেবে না। আমরা যে আমল করেছি, সেটাই নির্ধারণ করবে আপনার-আমার অবস্থান কোথায় হবে। তবে সুপারিশ করবেন একজন তিনি হলেন আমাদের শেষ নবী হজরত মোহাম্মাদ (সা.)। এ ছাড়া অন্য কোনো মার্কা বা রাজনৈতিক দল সুপারিশ করতে পারবে না। যারা আজকে ধর্মের নামে রাজনীতি করতে চায়, অথবা বিভ্রান্ত করতে চায়, সেই মানুষগুলো থেকে সাবধান থাকতে হবে। ধর্মকে ধর্মের জায়গায় রাখতে হবে, রাজনীতিকে রাজনীতির জায়গায় রাখতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের ঘোড়াঘাটের মানুষ সচেতন আছে বলে বিশ্বাস করি।
বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরামের এই সদস্য বলেন, আজকে যারা সংস্কারের কথা বলেন, তারা বলেন ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে। আর বিএনপি তো ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে অনেক আগে। কাজেই যারা বিএনপিকে সংস্কারের শিক্ষা দিতে চান তাদের বলতে চাই, ভাইয়েরা শিক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করা ভালো। কিন্তু ইতিহাসকে বিকৃত করার চেষ্টা করবেন না। কারণ ইতিহাস বলে বিএনপি সংস্কারের দল। একসময় একদলীয় শাসন ব্যবস্থা করা হয়েছিল, সেখান থেকে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় ব্যবস্থা চালু করেন। অর্থাৎ তার হাত ধরেই সংস্কার শুরু। শহীদ জিয়া মুক্তবাজার অর্থনীতি চালু করেন, আজকে প্রবাসীরা দেশের বাইরে গিয়ে কাজ করছেন এটাও করেছেন জিয়াউর রহমান, গার্মেন্টস শিল্পের শুরু তার হাত ধরেই। কাজেই আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, অর্থাৎ বিএনপি।
অনুষ্ঠানে ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও স্থানীয় সাধারণ মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
ইএ/টিকে