দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (১০ নভেম্বর) দরপতন হয়েছে। এই নিয়ে টানা সপ্তম দিনের মতো দরপতন হলো। এই ৭ কার্যদিবসের দরপতনে এক্সচেঞ্জটির প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২৬১ পয়েন্টের বেশি। এর মধ্যে আজ ৩৯ পয়েন্ট কমেছে। অন্য দুই সূচকেও পতন হয়েছে। এক্সচেঞ্জটির লেনদেনেও গতি কমেছে। আজ ১৩ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন হয়েছে।
বাজার বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রধানত তিনটি কারণে দেশের পুঁজিবাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এর মধ্যে প্রধান কারণ হলো- আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা। এছাড়া, সম্প্রতি গেজেট আকারে প্রকাশিত মার্জিন ঋণ বিধিমালা প্রক্রিয়া জটিল হওয়া এবং পাঁচ ব্যাংক একীভূত হলে বিনিয়োগকারী শেয়ার শূন্য হবেন কিনা, সে বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা না পাওয়া।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে আজ মোট ৩৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ৭০টির। বিপরীতে কমেছে ২৭৫টির। এই দরপতন দরবৃদ্ধির চেয়ে ৩ দশমিক ৯৩ গুণ। আজ লেনদেন শেষে ৪১টি সিকিউরিটিজের দর অপরিবর্তিত রয়েছে। দরপতন হওয়া সিকিউরিটিজগুলোর মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরির ১৪৪টি, ‘বি’ ক্যাটাগরির ৫২টি এবং ‘জেড’ ক্যাটাগরির ৭৯টি শেয়ার ও ইউনিট রয়েছে।
অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্টে বা প্রায় ১ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৮৬১ পয়েন্টে নেমেছে। গত ৩০ অক্টোবরের পর থেকে এই সূচকটি টানা পয়েন্ট হারাচ্ছে। ওইদিন সূচকটির অবস্থান ছিল ৫ হাজার ১২২ পয়েন্টে। অর্থাৎ মাত্র ৭ কার্যদিবসে সূচকটি কমেছে ২৬১ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট। গতকাল (রোববার) লেনদেন শেষে সূচকটির অবস্থান ছিলো ৪ হাজার ৯০০ পয়েন্টে।
অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস দিনের ব্যবধানে ১২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ১৬ শতাংশ কমে ১ হাজার ১১ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। গতকাল সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ২৩ পয়েন্টে। আর ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের চেয়ে ১৯ পয়েন্ট বা প্রায় ১ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯১০ পয়েন্টে নেমেছে। গতকাল সূচকটির অবস্থান ছিল ১ হাজার ৯২৯ পয়েন্টে।
ডিএসইতে আজ আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেন কমেছে ৪৫ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এদিন মোট ৩৫৬ কোটি ৩৩ লাখ টাকার সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেন ১৩ কার্যদিবস বা গত ২২ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন, ওইদিন ৩৫৫ কোটি ৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল। গতকাল এক্সচেঞ্জটিতে ৪০২ কোটি ২০ লাখ টাকার সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছিল।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) আজ অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হয়েছে। এতে এক্সচেঞ্জটির সবগুলো মূল্যসূচক পয়েন্ট হারিয়েছে। পাশাপাশি এদিন সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে।
সিএসইতে আজ মোট ১৭৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭টির দর বেড়েছে এবং কমেছে ১২৭টির। আর ৯টির দর দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল।অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দরপতন হওয়ায় সিএসইর সার্বিক সূচক সিএসপিআই আজ ১৪০ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ৭৪৩ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে। আর সিএসসিএক্স সূচকটি ৭৫ পয়েন্ট কমে ৮ হাজার ৫০৫ পয়েন্টে নেমেছে। এছাড়া, সিএসই ৫০ সূচক ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৬০ পয়েন্টে, সিএসই ৩০ সূচক ৭৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৩২৭ পয়েন্টে এবং সিএসআই সূচক ৮ পয়েন্ট কমে ৮৬২ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে।
এদিকে আজ এক্সচেঞ্জটিতে সার্বিক লেনদেন হয়েছে ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা। গতকাল সিএসইতে ২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছিল।
এসএস/টিকে