বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পসের (বিএনসিসি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সায়েদ আল মাসুদ জানিয়েছেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে ৪০ লাখ দক্ষ ক্যাডেট তৈরির লক্ষ্য নিয়ে তাদের কাজ এগিয়ে চলেছে।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর বেইলি রোডে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক সভায় ‘বিএনসিসির মাধ্যমে জাতীয় রূপান্তর’ শীর্ষক এক উপস্থাপনায় তিনি এ তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বিএনসিসির দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি দৃঢ় সমর্থন জানিয়ে বলেন, গুণগত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যৎমুখী দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করাই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বিএনসিসির পক্ষে, কিন্তু আমাদের নজর দিতে হবে গুণগত মানে–বিশ্বাসযোগ্য ও যোগ্য প্রশিক্ষক থাকতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের মনোযোগী হতে হবে এবং ভবিষ্যৎমুখী ভাবনা নিতে হবে।’
প্রধান উপদেষ্টা আত্মমর্যাদা, শৃঙ্খলা ও অন্তর্ভুক্তিকে বিএনসিসির মূল মূল্যবোধ হিসেবে গুরুত্ব দেন। তিনি মন্তব্য করেন, ‘বিএনসিসি মানে আত্মমর্যাদা ও শৃঙ্খলা।’
ড. ইউনূস ক্যাডেটদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের সহায়তার ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘ক্যাডেটদের জন্য এমন একটি সনদপ্রদান ব্যবস্থা থাকতে হবে, যা তাদের ভবিষ্যৎ কর্মসংস্থানে সহায়ক হবে। পাশাপাশি তাদের ভবিষ্যৎ উন্নয়নের জন্য নেটওয়ার্কিংয়ের সুযোগও তৈরি করতে হবে।’
তিনি বিএনসিসিতে মেয়েদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন এবং বলেন, ‘বিএনসিসি শুধু ছেলেদের জন্য নয়।’
বিএনসিসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবু সঈদ আল মসউদ তার উপস্থাপনায় জানান, বর্তমানে বিএনসিসির আওতায় ৫৬১টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৪০ লাখ দক্ষ ক্যাডেট প্রশিক্ষণ দেয়াই তাদের লক্ষ্য। তিনি আরও জানান, বিএনসিসিতে যোগদানের বয়সসীমা ১৭ থেকে ১৮ বছর।
সভায় উপস্থিত জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান সম্প্রতি জাতীয় ঘটনাগুলোতে বিএনসিসির ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিএনসিসি ক্যাডেটরা রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করেছিল–এটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’ তিনি যোগ্য প্রশিক্ষক নিয়োগকে অগ্রাধিকার দেয়ার পরামর্শ দেন।
সভায় অন্যদের মধ্যে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বিএনসিসি নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সরকার নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও নাগরিক দায়িত্ববোধের মাধ্যমে তরুণদের উন্নয়নকে জাতীয় রূপান্তরের মূলধারায় একীভূত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
টিএম/এসএন