আগামী জাতীয় নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে এ ব্যাপারে জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী আমিনুল হক।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) রাজধানীর পল্লবীর মেহেদীবাগ এলাকাবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
আমিনুল হক বলেন, ‘সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশের মানুষকে তাদের ভোট প্রদান ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আগামী যে নির্বাচন, সে নির্বাচনকে পেছানোর জন্য, নির্বাচনকে বানচাল করার জন্য দেশি-বিদেশি অনেকেই ষড়যন্ত্র করে বেড়াচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু ভোট দিতে চায়। কিন্তু যারা বাংলাদেশে বসে বাংলাদেশের নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে, তারা শুধু তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করার জন্য এই কাজ করছে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক এই সম্পাদক বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা দেশের অভ্যন্তরে একটি অস্থির পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে, যার প্রমাণ হিসেবে তিনি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া আগুন-সন্ত্রাসের ঘটনাগুলোর উল্লেখ করেন।
ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি আমিনুল হক তার মূল রাজনৈতিক লক্ষ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রত্যেকটি মানুষ আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে বাংলাদেশে একটি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে মুখিয়ে আছে। সেই জনগণের সরকার অবশ্যই বাংলাদেশের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে এবং এই পথেই পরিপূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব।’
গণতন্ত্রের সৌন্দর্য ‘ভিন্নমত’ উল্লেখ করে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির এই আহ্বায়ক বলেন, ‘বিগত ১৭ বছর ক্ষমতাসীন স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার সবসময় বিরোধী মতের উপরে, বিরোধী দলের ওপরে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়েছে।’
এই ১৭ বছরের ইতিহাস স্মরণ রেখে ভবিষ্যতে একটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
আগামীতে একটি সুস্থ ধারার রাজনৈতিক পরিবেশের মাধ্যমে প্রতিটি সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং সুন্দর ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ার আকাঙ্ক্ষা জানিয়ে আমিনুল হক জানান, তার দল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, শিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং নিম্নআয়ের মানুষের জন্য স্থায়ী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে চায়।
তিনি জানান, তার নির্বাচনী এলাকা পল্লবী ও রূপনগরের প্রতিটি ওয়ার্ডের সমস্যাগুলো নথিভুক্ত করা হচ্ছে। সমস্যাগুলো এবং এর সমাধান কী, সেই বিষয়গুলো নিয়ে ইতোমধ্যে আমাদের কাজ চলছে। খুব শিগগিরই সেই বিষয়গুলো আপনাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
আমিনুল হক বলেন, ‘দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্দোলনে যারা গুম ও শহীদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগে একটি স্বৈরাচারমুক্ত বাংলাদেশ পাওয়া গেছে। তাই ভবিষ্যতে যেন আর কোনো ফ্যাসিবাদ না আসে, সে জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
সভায় তিনি আগুন-সন্ত্রাসের অভিযোগের জবাবে বলেন, ‘১৭ বছর ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার দেশের ভেতরে অস্থির পরিবেশ তৈরি করে এসব কর্মকাণ্ড বিএনপির বিরুদ্ধে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। কিন্তু বর্তমানে প্রমাণ হয়েছে যে, এই ধরনের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কখনোই বিএনপি জড়িত ছিল না। কারণ, বিএনপি সবসময় মানুষের পাশে ছিল, মানব কল্যাণের জন্য ছিল, মানুষের কীভাবে উন্নয়ন হবে, সেই মানব কল্যাণের মাধ্যমে সেই মানুষের উন্নয়ন করার চেষ্টা করেছে।’
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী রেজাউনুল হোসেন রিয়াজ, মাহবুব আলম মন্টুসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
টিজে/টিএ