ভালোবাসার শাড়ির তালিকায় জামদানির স্থান সবসময়ই প্রথম সারিতে। দেশের যে নারীই শাড়ি ভালোবাসেন, তাঁর সংগ্রহে অন্তত একটি জামদানি থাকবেই-এই সত্য যেন অব্যর্থ। অভিনেত্রী জয়া আহসানও এর ব্যতিক্রম নন। বিভিন্ন দেশে জামদানি পরেই তিনি নিজেকে উপস্থাপন করেছেন, কুড়িয়ে এনেছেন বিস্তর প্রশংসা। এই জামদানি তৈরির পেছনে থাকে বহু মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম, নিষ্ঠা আর ঘাম। তাঁদেরই একজন, খ্যাতিমান তাঁতশিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর, গতকাল সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোকের পাশাপাশি হূদয়ভরা আক্ষেপও প্রকাশ করেছেন জয়া আহসান।
আজ দুপুরে সামাজিক মাধ্যমে একটি পোস্টে জয়া লিখেছেন, ‘জামদানি শাড়ি আমার কাছে সাংস্কৃতিক পরিচয়ের একটি অংশ। এ শাড়ির প্রতিটি সুতা, প্রতিটি নকশা আমাকে নিজের পরিচয় জানান দেয়। আমি অনুভব করি, এটি আমার আবেগের ভাষা, যা আমাকে আমার সংস্কৃতি ও ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত করে।'
জয়া আরও লিখেছেন, ‘ছবিতে আমি যে সাদা রঙের অপূর্ব শাড়িটি পরে আছি, এটি তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশের তাঁতশিল্পী ওস্তাদ আলী আকবর (৮৩)। তিনি গতকাল সকালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। আমরা সত্যিই একজন রত্ন হারিয়েছি। কারণ, এই জামদানির নকশাটি তিনি ছাড়া আর কেউই তৈরি করতে পারতেন না-আর হয়তো পারবেনও না।’
কাজের তুলনায় তাঁতশিল্পীরা উপযুক্ত পারিশ্রমিক পান না। ফলে এই শিল্প দিনে দিনে হারিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন জয়া।
জয়া বলেন, “জামদানি শাড়ি তৈরি ও নকশা করা বিশাল ধৈর্য এবং পরিশ্রমের কাজ। কিন্তু এর তুলনায় আয় তেমন হয় না। ফলে তাঁতিদের পরবর্তী প্রজন্ম এই কাজে আগ্রহ পায় না। আমরা যদি তাঁতিদের যথাযথ সম্মান ও পাওনাটা দিতে পারতাম, তবে হয়তো এই শিল্পটাও আজকের মতো হারিয়ে যেতে বসত না।’
ওস্তাদ আলী আকবরকে স্মরণ করে জয়া বলেন, ‘এই মোটিভটি শুধু আলী আকবর ভাই-ই তৈরি করতে পারতেন; আর কোনো কারিগর পারতেন না। তার শরীর নিভে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই গুণটিও হারিয়ে গেল। একজন পরিশ্রমী, সত্যিকারের শিল্পীর প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। আপনারা সবাই আমাদের এই ওস্তাদ তাঁতিকে আন্তরিক প্রার্থনায় রাখবেন।’
প্রসঙ্গত, প্রসঙ্গত, ২০২৫ সালে ‘জয়া আর শারমিন’, ‘উৎসব’, ‘তাণ্ডব’, ‘ফেরেশতে’, ‘ডিয়ার মা’, ‘পুতুলনাচের ইতিকথা’ সিনেমায় দেখা গেছে জয়া আহসানকে। সামনে আরও কয়েকটি নতুন প্রকল্পে দেখা যাবে তাঁকে।
টিকে/