সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দীর্ঘ একটি অনুভূতিমূলক স্ট্যাটাস দিয়েছেন জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর মেয়ে সুমাইয়া রাবেয়া।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দেওয়া সেই লেখায় তিনি তুলে ধরেন পরিবারের কঠিন সময়, ব্যক্তিগত মানসিক সংগ্রাম ও বাবার বিচারপ্রক্রিয়া ঘিরে নানা অভিজ্ঞতা।
রাবেয়া জানান, তার বাবার রায় ঘোষণার সময় তিনি প্রথম সন্তান ধারণ করেছিলেন। জীবনের নতুন অধ্যায়ের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছিল পুলিশি অভিযান, পরিবারে অস্থিরতা, ভাইয়ের গুম হওয়া, দুই পরিবারেই ভয় আর অশান্তি। এমন পরিস্থিতিতে মা হওয়ার খবরটুকুই ছিল তাঁদের একমাত্র সান্ত্বনা।
তিনি লেখেন, সেই সময়ে বাবা এবং বাবার আইনজীবী আরমান ভাই দুজনেই তার জন্য দোয়া করেছিলেন। আরমান ভাই নিয়মিত ভিজিটেশনের বাইরেও বাবার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন।
রাবেয়ার দাবি, আন্তর্জাতিক মহলেও তখন চাপ বাড়ছিল। অনেকেই বলছিলেন-মীর কাসেম প্রকৃতপক্ষে রাজনৈতিক ব্যক্তি নন, ’৭১ সালে তার বয়স ছিল মাত্র ১৯ বছর; তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো অতিরঞ্জিত। তাঁদের বিশ্বাস ছিল-হয়তো মৃত্যুদণ্ড হবে না; আজীবন কারাদণ্ড হলেও অন্তত দেখা করার সুযোগ থাকত। কিন্তু রায় ঘোষণার পর সেই আশা ভেঙে যায়।
তিনি বর্ণনা করেন, মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার পর বাবার বিজয়চিহ্ন দেখানো ছিল অত্যন্ত বেদনামাখা মুহূর্ত। গর্ভাবস্থায় মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তিনি ভেঙে পড়েন। এরপর সংকীর্ণ ভ্যানে অমানবিকভাবে তাকে কনডেম্নড সেলে পাঠানো হয়।
রাবেয়ার কথায়, জেলগেটের সামনে আইনজীবী আরমান ভাইয়ের কান্না আজও তার মনে বাজে। সেই মানসিক চাপের চরম সময়ে তিনি নিজের অনাগত সন্তানকেও হারান।
কেএন/টিকে