চীনে অন্তত দুটি জনপ্রিয় জাপানি চলচ্চিত্রের মুক্তি স্থগিত করা হয়েছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচির তাইওয়ান নিয়ে মন্তব্যকে ঘিরে দুই দেশের মধ্যে বিরোধ তৈরি হওয়ার ফলাফল এটি।
চীনা রাষ্ট্রীয় মাধ্যম সিসিটিভির তথ্য অনুযায়ী যেসব ছবির মুক্তি বিলম্বিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আছে ‘ক্রেয়ন শিন-চ্যানের সিনেমা: সুপার হট! দ্য স্পাইসি কাসুকাবে ড্যান্সার্স’, এটি একটি ছোট ছেলে এবং তার বন্ধুদের অ্যাডভেঞ্চার নিয়ে একটি অ্যানিমেটেড কমেডি। সিনেমাটি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।
এরপর ‘সেলস অ্যাট ওয়ার্ক!’, এই সিনেমার মুক্তিও স্থগিত করা হয়েছে। এটি একটি লাইভ অ্যাকশন সিনেমা। যেখানে মানব রক্তকণিকা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার ওপর ভিত্তি করে তৈরি। তবে সিসিটিভি জানায়নি সিনেমাগুলির মুক্তি কতক্ষণ বিলম্বিত হবে।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত একটি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তাকাইচির মন্তব্যের পর ‘ডেমন স্লেয়ার: ইনফিনিটি ক্যাসেল’ চলচ্চিত্রটি নিয়ে চীনা দর্শকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। বিবিসি জানিয়েছে, তারা ইতোমধ্যেই চলচ্চিত্রটির পরিবেশক সংস্থাগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে জাপানের বড় মিডিয়া প্রতিষ্ঠান তোহোও।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি ৭ নভেম্বর জাপানের পার্লামেন্টে বলেন, চীন যদি তাইওয়ানে হামলা করে এবং তা জাপানের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়, তবে জাপান সামরিকভাবে জবাব দিতে পারে। এই বক্তব্যের পর দুই দেশের সম্পর্কে বড় ধরনের বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে।
এর পর থেকেই বেইজিং তার নাগরিকদের জাপান ভ্রমণ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিচ্ছে এবং শিক্ষার্থীদেরও সেখানে পড়াশোনার পরিকল্পনা পুনর্বিবেচনা করতে বলছে। কারণ হিসেবে নিরাপত্তা ঝুঁকির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যদিকে জাপানও চীনে তাদের নাগরিকদের সতর্ক করেছে।
এ ঘটনার পরে বিনিয়োগকারীরা চীনের প্রতিক্রিয়ার প্রভাব বিবেচনা করছেন। জাপানের পর্যটন, বিমান পরিবহন ও খুচরা বিক্রির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে কমেছে।
এর কারণ, জাপানে ভ্রমণকারী পর্যটকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে চীন। চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে প্রায় ৭৫ লাখ চীনা পর্যটক জাপান ভ্রমণ করেছেন।
বেইজিং তাইওয়ানকে একটি বিচ্ছিন্ন প্রদেশ হিসেবে দেখে। তাইওয়ানকে নিজেদের দখলে নিতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও তারা নাকচ করেনি। তবে বহু তাইওয়ানবাসী নিজেদের একটি আলাদা দেশের অংশ হিসেবে মনে করেন, যদিও অধিকাংশই বর্তমান অবস্থান বজায় রাখার পক্ষে। যেখানে তাইওয়ান চীন থেকে নিজেদের স্বাধীনতা ঘোষণা করেনি বা চীনের সঙ্গে একত্রিতও হয়নি।
সূত্র : বিবিসি
এবি/টিকে