দুই দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ফ্রান্সের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত জ্যাঁ-মার্ক সেরে-শারলে। তিনি বলেছেন, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ফ্রান্স ও বাংলাদেশের স্বার্থ ঘনিষ্ঠভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ফ্রান্স ও বাংলাদেশের জন্য অংশীদারত্ব এগিয়ে নেয়া ও সহযোগিতা সম্প্রসারণের এটি এক উপযুক্ত সময়।
এই মাসের শুরুতে দায়িত্ব গ্রহণকারী রাষ্ট্রদূত জানান, ফ্রান্সের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ ফরাসি নাগরিক ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে বসবাস করেন, যা ফ্রান্সের মোট জনসংখ্যার প্রায় তিন শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল উন্মুক্ততা ও অবাধ চলাচলের মাধ্যমে চিহ্নিত। বাংলাদেশকে নিয়ে ফ্রান্সের বাড়তি সম্পৃক্ততার সম্ভাবনা অনেক।’
রাষ্ট্রদূত আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য প্রক্রিয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এবং উল্লেখ করেন যে কঠিন পরিস্থিতিতেও নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশে সহায়ক হতে পারে।
তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সময়ে কিছু ইউরোপীয় দেশ নির্বাচনকে ঘিরে সংগঠিত বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা ও সামাজিক বিভাজন তৈরির প্রচেষ্টার মুখোমুখি হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত সেরে-শারলে প্রফেসর ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে বলেন, তিনি দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে সফল হয়েছেন। এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রক্রিয়া নির্বিঘ্ন করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়ানোর ব্যাপারে ফ্রান্সের ইচ্ছা তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের এই উত্তরণ যাতে যতটা সম্ভব মসৃণভাবে হয়, সে ব্যাপারে ফ্রান্স সহায়তা করতে প্রস্তুত।’
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ফ্রান্সের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ফ্রান্স বাংলাদেশের এক বিশ্বস্ত ও দীর্ঘদিনের অংশীদার। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ ও আসন্ন নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতকে অবহিত করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বাংলাদেশ যখন ঐতিহাসিক একটি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে, ঠিক সেই গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আপনার দায়িত্ব গ্রহণ।’
তিনি গণতন্ত্র, মানবাধিকার, জলবায়ু উদ্যোগ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকারগুলোতে ফ্রান্সের ধারাবাহিক সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
প্রফেসর ইউনূস তার ফ্রান্স ও ফরাসি সংস্থাগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের কথাও স্মরণ করেন, যা তিনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার আগে দেশটিতে বহুবার সফরের মাধ্যমে গড়ে তুলেছিলেন।
টিজে/টিএ