২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর অগণিত ভক্তকে কাঁদিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান ডিয়েগো ম্যারাডোনা। পুরো পুথিবী যেন শোকে ভেসেছিল সেদিন। পাঁচ বছর হয়ে গেছে তিনি আর নেই। তার মৃত্যু খুলে দেয় এক অস্বস্তিকর অধ্যায়। ফুটবল লিজেন্ডকে সমাহিত করা হয় তার দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হৃদপিণ্ড ছাড়াই।
শুধু হৃদপিণ্ড নয়, ময়নাতদন্তের জন্য তার লিভার, কিডনির মতো আরও কিছু অঙ্গ বের করে নেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে সেগুলো ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছিল। তবে হৃদপিণ্ড রাখা হয়েছে পুলিশের জিম্মায়।
আর্জেন্টিনারলা প্লাতায় বুয়েনস এইরেস প্রাদেশিক পুলিশের প্যাথলজি ডিপার্টমেন্টে ফরমালডিহাইডে সংরক্ষিত অবস্থায় রাখা আছে ম্যারাডোনার হৃদপিণ্ড। যার ওজন ৫০৩ গ্রাম, যা স্বাভাবিক হৃৎপিণ্ডের প্রায় দ্বিগুণ। তদন্ত চলাকালে বেশ কয়েকটি মাইক্রো-ইনফার্কশনের দাগও লক্ষ করা গেছে তাতে।
দিয়ারিও এএস-এর প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এমন কড়া নিরাপত্তার কারণ হৃৎপিণ্ডের প্রতীকী গুরুত্ব। আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- কিছু চরমপন্থি গোষ্ঠী একে স্মারক হিসেবে চুরি করার হুমকি দিয়েছিল। তখনই
কর্তৃপক্ষ এটি ম্যারাডোনার মরদেহের সঙ্গে সমাহিত করার মতো ঝুঁকি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
বর্তমান সংরক্ষণ প্রটোকল অনুসারে, বিশ্বকাপ জয়ীর এই অঙ্গটি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অন্তত ১০ বছর তা পুলিশের সুরক্ষায় রাখতে হবে। তারপর পরিবারের মতামত, আদালতের নির্দেশনা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে হৃদ্যন্ত্রটি শেষ পর্যন্ত ম্যারাডোনার মরদেহের পাশে রাখা হবে কি না।
ফুটবল আইকনের মরদেহ বুয়েনস এইরেসের হারদিন বেয়া ভিস্তা সমাধিক্ষেত্রে মা-বাবার পাশে ব্যক্তিগত কবরে রাখা হয়েছে।
কিন্তু এই হৃদপিণ্ড হয়ে উঠেছে তারই কিংবদন্তিতুল্য জীবনের একটি অংশ, যা সংরক্ষিত রয়েছে কড়া নিরাপত্তায়। এ যেন ম্যারাডোনার জীবনের দীর্ঘ গল্পের আরেক অংশ।
পিএ/এসএন