বাউল সম্প্রদায়ের কার্যক্রম বন্ধ ও বাউলদের ওপর হামলার বিপরীতে যে মামলা হয়েছে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর হেফাজত।
শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এই আহ্বান জানান তিনি।
এ সময় হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর হেফাজতের সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, বাউলদের বই-পুস্তক ও কর্মকাণ্ড দেখে দেশের মুসলমানরা বুঝে গেছে তারা ইসলামের ধারেকাছেও নেই। তাদের মাধ্যমে নির্যাতিত নারীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন। তারা যেখানে যায় সেখানেই অনৈতিক কাজ করে। বাউলদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠেছে, কোনো বিবেকবান মানুষ তাদের পক্ষ নিতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, দুঃখজনক বিষয় হলো আমাদের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেছেন, বাউলদের ওপর যারা আক্রমণ করেছেন। তাদেরকে আটক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
‘পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, ইউনুস সাহেব আপনাকে রক্ত দিয়ে আমরা ক্ষমতায় বসিয়েছি। কিন্তু আপনি বাউলদের পক্ষ অবলম্বন করবেন। বাউলদের ওপর কেউ আক্রমণ করে নাই। বাউলরা কোরআনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে, ইসলামের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। শরীয়তের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। শরীয়তের আইন হলো ওয়াজিবুল কতল। কাজেই আমাদের বাধ্য করবেন না।
প্রশাসনের উদ্দেশ্যে আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ওলামায়কেরাম ও মানিকগঞ্জের যে সকল তৌহিদী জনতার বিরুদ্ধে যে সকল মামলা হয়েছে তা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে। বাউলদের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের শনিবার (৬ ডিসেম্বর) মধ্যে আটককরতে হবে। আগামীকাল মানিকগঞ্জে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সমাবেশের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে মামলা প্রত্যাহার করা হবে। এইজন্য সমাবেশ পেছানো হয়েছে। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) আগে মামলা প্রত্যাহার না করা হলে মানিকগঞ্জ অচল করে দেওয়া হবে। প্রশাসনের ভাইদের বলতে চাই, বাংলাদেশে যদি তাদের (বাউল) তৎপরতা বন্ধ না করা হয়, তাদেরকে যদি হয় সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা না করা হয়। সারা বাংলাদেশের মসজিদ থেকে মিছিল বের করে দেশ অচল করে দেওয়া হবে।
কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহারের উদ্দেশ্যে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব বলেন, জনাব ফরহাদ মজহার সাহেব। সাবধান, সাধু সাবধান। আপনি সাহিত্যের মানুষ। সাহিত্য নিয়ে কথা বলেন, প্রচার করেন। কিন্তু আপনি ইসলাম সম্পর্কে সম্পূর্ণ জাহেল। একবার বলেছেন, বাউল আবুল সরকারকে আটক করা হয় নাই, গ্রেফতার আমাকে করা হয়েছে। আপনি কে, আপনাকে ধরলে কি হবে? আপনি যদি বাউলদের পক্ষে কথা বলা থেকে বিরত না হন, দুঃখ প্রকাশ না করেন। ক্ষমা না চাইলে আপনাকেও ক্ষমা করতে হবে।
মহাসচিব ফখরুল ইসলামের বিভিন্ন সময় দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ইসলামী মূল্যবোধেবিশ্বাসী বিএনপির মহাসচিব সাহেবকে সাবধান করে দিতে চাই। আপনি এক বক্তৃতায় বলেছেন শরীয়ত আইন মানেন না। আবার এখন বাউলদের পক্ষ অবলম্বন করে, যারা বাউলদের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদেরকে আপনি ধর্মান্ধ বলেছেন। পরিষ্কার ভাষায় বলছি আপনার বক্তব্য প্রত্যাহার করে মুসলমানের কাছে ক্ষমা চান। না হলে বিএনপির মহাসচিব পদ থেকে পদত্যাগ করুন ।
টিজে/টিকে