সাম্প্রতিক সময়ের হতাশা ঝেরে ফেলতে অসাধারণ দুটি গোল উপহার দিলেন কিলিয়ান এমবাপে। দলের আরেক গোলেও রাখলেন অবদান। তার দারুণ নৈপুণ্যে আথলেতিক বিলবাওকে উড়িয়ে দিল রিয়াল মাদ্রিদ।
সান মামেসে বুধবার রাতে লা লিগার ম্যাচটি ৩-০ গোলে জিতেছে শাবি আলোন্সোর দল। তাদের আরেক গোলদাতা এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গা। দাপুটে জয়ে বার্সেলোনার সঙ্গে ব্যবধান ১ পয়েন্টে নামিয়ে আনল মাদ্রিদের দলটি।
আসরে আগের তিন রাউন্ডে রায়ো ভাইয়েকানোর বিপক্ষে গোলশূন্য, এলচের বিপক্ষে ২-২ ও জিরোনার বিপক্ষে ১-১ গোলে ড্র করেছিল রিয়াল।দারুণ পারফরম্যান্সে টানা ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠল তারা।
১৫ ম্যাচে ১১ জয় ও ৩ ড্রয়ে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে রিয়াল মাদ্রিদ। তাদের চেয়ে ১ পয়েন্ট বেশি নিয়ে শীর্ষে বার্সেলোনা। সমান ম্যাচে ২০ পয়েন্ট নিয়ে অষ্টম স্থানে বিলবাও।
লা লিগায় টানা তিন ম্যাচে হোঁচট এবং শীর্ষস্থান হারানোর হতাশা, সব মিলিয়ে আগের পাঁচ ম্যাচের মাত্র একটিতে জয়- ভীষণ বাজে সময়ের বলয়ে ঢুকে পড়া রিয়াল কক্ষপথে ফেরার মিশনে দারুণ শুরু করে। প্রথম পাঁচ মিনিটে এমবাপে ও ভিনিসিউসের শট বিলবাওয়ের গোলরক্ষক ঠেকিয়ে দিলেও, সপ্তম মিনিটে আর পারেননি তিনি।
নিজেদের সীমানা থেকে উঁচু করে বল বাড়ান ট্রেন্ট অ্যালেকজ্যান্ডার-আর্নল্ড। মাঝমাঠের কাছে দারুণভাবে বল নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ফাঁকেই একজনকে ফাঁকি দেন এমবাপে, এরপর দ্রুত এগিয়ে আরেকজনকে কাটিয়ে ডি-বক্সের বাইরে থেকে দারুণ শটে দলকে এগিয়ে নেন তিনি।
শুরুর চাপ সামলে ধীরে ধীরে পাল্টা আক্রমণে মনোযোগী হয় বিলবাও। ২৫তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগও তৈরি করে তারা; তবে গোর্খা গুরুজেতার জোরাল শট দারুণভাবে রুখে দেন থিবো কোর্তোয়া।
পাঁচ মিনিট পর আবার প্রতিপক্ষের রক্ষণে ভীতি ছড়ায় স্বাগতিকরা এবং কোর্তোয়ার আরেকটি দুর্দান্ত সেভ এগিয়ে রাখে রিয়ালকে। এবার স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড বেরেংগেরের শট পোস্ট থেকে একটু এগিয়ে আটকান বেলজিয়ান গোলরক্ষক।
প্রতি-আক্রমণে ৩৮তম মিনিটে ব্যবধান বাড়াতে পারতেন ভিনিসিউস। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ডের শট আবার ঠেকিয়ে দেন উনাই সিমোন। এর চার মিনিট পর চমৎকার গোছানো এক আক্রমণে ব্যবধান দ্বিগুণ করে দলটি।
পাসিং ফুটবলে অসাধারণ গোছানো এক আক্রমণের ফল হয়ে আসে গোলটি, যেখানে জড়িয়ে রিয়ালের প্রায় সব খেলোয়াড়। সবশেষে বাঁ পোস্ট থেকে এমবাপের হেড পাস আরেক পোস্টে ফাঁকায় পেয়ে হেডেই গোলটি করেন কামাভিঙ্গা।
বিরতির পর দূরপাল্লার শটে কোর্তোয়ার পরীক্ষা নেন মিকেল। দারুণ দৃঢ়তায় একহাত দিয়ে বল ক্রসবারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠান তিনি। বিলবাও সফল না হলেও, কিছুক্ষণ পর দূর থেকে নেওয়া শটে বাজিমাত করেন এমবাপে। আলভারো কারেরাসের পাস পেয়ে, আচমকা ২৫ গজ দূর থেকে বুলেট গতির শট নেন ফরাসি তারকা, পোস্ট ঘেঁষে তা ঠিকানা খুঁজে পায়।
এবারের লা লিগায় ১৫ ম্যাচে বিশ্বকাপ জয়ী ফরোয়ার্ডের গোল হলো ১৬টি। ৮ গোল করে তালিকার দ্বিতীয় স্থানে আছেন বার্সেলোনার ফেররান তরেস। ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা প্রায় কেটে যাওয়ায় ৭৮তম মিনিটে একসঙ্গে এমবাপে ও ভিনিসিউসকে তুলে নেন কোচ, একই সঙ্গে এদের মিলিতাওকেও। তাদের জায়গায় নামেন রদ্রিগো, ব্রাহিম দিয়াস ও গন্সালো গার্সিয়াকে।
৮২তম মিনিটে ডি-বক্সের বাইরে থেকে ফেদেরিকো ভালভের্দের শট ঠেকিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি সিমোন। তবে, তার সতীর্থরা বাকি সময়ে তেমন কিছুই করতে পারেনি।
তাইতো, নির্ধারিত সময়ের বেশ কিছুক্ষণ বাকি থাকতেই বিলবাওয়ের অনেক সমর্থককে স্টেডিয়াম ছাড়তে দেখা যায়।
এমআর