জুলাই বিপ্লবে সম্মুখ সারির যোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের সমন্বয়ক ওসমান হাদিকে গুলি করার ঘটনা মানে বাংলাদেশের সব জুলাই যোদ্ধাদের ওপর আঘাত এমন মন্তব্য করেছেন রংপুর জেলা এনসিপির আহ্বায়ক আল মামুন।
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলা এনসিপির আয়োজনে মশাল মিছিল ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
আল মামুন বলেন, জুলাই যোদ্ধা থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ আজ চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। শুধু জুলাই যোদ্ধারাই নয়, দেশে একের পর এক হত্যাকাণ্ড ও ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।
আমরা যারা জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়েছি, তারাই এই অন্তর্বর্তী সরকারকে বসিয়েছি। তাই এই সরকারের কাছেই আমাদের জবাবদিহি চাই।
তিনি অভিযোগ করেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি হয়েছে। হত্যাকারীরা নির্বিঘ্নে খুন করে পাশের দেশে পালিয়ে যাচ্ছে, আর সরকার নাটকীয়ভাবে তাদের ধরার চেষ্টা করছে।
এটা নাটক ছাড়া আর কিছু নয়।
আল মামুন আরো বলেন, আজ ওসমান হাদির ওপর হামলা হয়েছে, কাল আমার ওপর কিংবা আমার সহযোদ্ধার ওপরও হতে পারে। এটি সারা দেশের মানুষের বিরুদ্ধে একটি পরিকল্পিত নীলনকশা কি না- তা সরকারকে স্পষ্ট করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, এই সরকার হয় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি ঘটাক, নয়তো পদত্যাগ করুক।
সাধারণ মানুষ নিরাপদ না হলে সাংবিধানিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। মানুষ যদি নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, তারা কীভাবে ভোটকেন্দ্রে যাবে?
সমাবেশে রংপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গার নির্বাচনের ঘোষণার প্রসঙ্গ টেনে আল মামুন বলেন, তিনি নিজেই বলেছেন, তিনি শেখ হাসিনার লোক। তিনি আবারো ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রে গঙ্গাচড়ায় প্রবেশের চেষ্টা করছেন। আমরা জুলাই যোদ্ধারা তাকে প্রতিহত করব।
তিনি আরো দাবি করেন, এ আসনে আগের আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের কেউ কেউ একটি দলের ব্যানারে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে, তারা কীভাবে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায় এবং নির্বাচন করার স্বপ্ন দেখে, এ প্রশ্নের জবাব স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দিতে হবে বলেন আল মামুন।
ওসমান হাদিকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে মশাল মিছিলটি গঙ্গাচড়া সরকারি কলেজ মোড়-এ এনসিপি কার্যালয় থেকে বের হয়ে উপজেলার গুরুপ্তপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে গঙ্গাচড়া বাজার জিরো পয়েন্টে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে আবারো কলেজ মোড়ে এসে শেষ হয়। গঙ্গাচড়া উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের এনসিপি নেতাকর্মীরা পৃথক পৃথক ব্যানার নিয়ে মশাল মিছিলে অংশ নেন। এ সময় উপজেলা এনসিপির সমন্বয়ক রিফাত চৌধুরীসহ দলের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এবি/টিকে