১৭ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বরণ করে নিয়েছেন দলটির নেতাকর্মীরা। এ জন্য দেশের বিভিন্ন প্রাপ্ত থেকে নেতাকর্মীরা যোগ দেন রাজধানীর ৩০০ ফিটের গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে। এতে যোগ দেন দক্ষিণবঙ্গের তৃণমৃলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। অনুষ্ঠান শেষে আবারও ঘরে ফেরার তাগিদে সন্ধ্যার পর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বেড়েছে মানুষের আনাগোনা।
বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) ভোরে বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী ও বরগুনা থেকে আসা প্রতিটি লঞ্চে নেতাকর্মীদের উপচে পড়া ভিড় ছিল। সারা দিনের কর্মসূচি শেষে এখন ক্লান্ত শরীরে, কিন্তু শান্ত মনে ফিরতি পথ ধরেছেন তারা।
দেশের প্রধান এই নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, রাত ৮টার পর থেকে লঞ্চগুলো ঘাট থেকে ছাড়তে শুরু করবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ব্যানার আর দলীয় প্রতীকের টি-শার্ট গায়ে থাকা কর্মীরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে টার্মিনালে ফিরছেন। ভোরে যার সঙ্গে কথা হয়েছিল, সেই আব্দুল মালেককে সন্ধ্যায় লঞ্চের সামনে বসে থাকতে দেখা গেল। তিনি দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, কষ্ট যা হওয়ার হইছে, কিন্তু নেতাকে তো দেখতে পারলাম। এই ১৭টা বছর এই দিনটার জন্যই তো আসায় ছিলাম। এখন বাড়ি গিয়া শান্তিতে ঘুমাইতে পারমু।
বরিশালের ছোট ব্যবসায়ী রিয়াজ, যিনি নিজের জমানো টাকায় ঢাকা এসেছিলেন, তাকেও দেখা গেল লঞ্চের কেবিনের সামনে। তার চোখেমুখে তৃপ্তির ছাপ। তিনি জানালেন, আজকের দিনটি তার জীবনের অন্যতম একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।
যদিও সন্ধ্যার পর সদরঘাটে ভোরের মতো সেই উপচে পড়া ভিড় নেই। অনেকেই তারেক রহমানের পরবর্তী কর্মসূচিগুলোতে অংশ নিতে ঢাকায় থেকে যাবেন আগামী দু-একদিন।
তবে যারা এসেছিলেন তাদের অনেকেই নিজ নিজ গন্তব্যে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সদরঘাট ও কোতোয়ালি থানা এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনো বজায় রাখা হয়েছে। মোড়ে মোড়ে মোতায়েন থাকা পুলিশ সদস্যরা যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছেন। স্থানীয় বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদেরও স্বেচ্ছাসেবকের ভূমিকায় দেখা যায়।
স্বেচ্ছাসেবকদের একজন ঢাকা দক্ষিণ শ্রমিক দলের সাবেক প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ মাসুম দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ভোরের দিকে চাপের তুলনায় সন্ধ্যায় ভিড় কিছুটা কম। তবে সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি নেতাকর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবেই ঘাটে ফিরছেন এবং লঞ্চগুলো একে একে ছেড়ে যাবে।
সদরঘাট টার্মিনালের প্রবেশপথে এবং পন্টুন সংলগ্ন এলাকায় অভ্যর্থনা বুথ স্থাপন করে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা। এসব বুথ থেকে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ক্লান্ত নেতাকর্মীদের পানি, শুকনো খাবার এবং প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। সকালে আগত কর্মীরা যাতে সহজে বিমানবন্দরের দিকে যেতে পারেন, সেজন্য স্বেচ্ছাসেবকদের পথনির্দেশনা দিতে দেখা যায়।
ভোর ৫টার দিকে বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন সদরঘাট এলাকায় আসেন। তিনি বিভিন্ন বুথ ঘুরে দেখেন এবং লঞ্চে করে আসা নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন।
ইশরাক হোসেন দেশের একটি গণমাধ্যমকে বলেন, দক্ষিণবঙ্গের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আমাদের প্রাণ। দীর্ঘ ১৭ বছর তারা নেতার ফেরার অপেক্ষায় ছিলেন। আজ সেই মহেন্দ্রক্ষণ। দীর্ঘ দেড় যুগের এই আবেগ আর অপেক্ষার সমাপ্তি টেনে দক্ষিণবঙ্গের এই মানুষগুলো আজ এক বুক স্মৃতি নিয়ে ফিরে যাবেন।
টিজে/টিকে