বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে দেশজুড়ে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই আপোষহীন নেত্রীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন। এ তালিকায় রয়েছেন দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে দেয়া এক পোস্টে বান্নাহ লেখেন, “বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীকের বিদায়। বিদায় আপোষহীন নেত্রী, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্তরে শান্তিতে রাখুক।” তার এই পোস্ট ইতোমধ্যেই সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে এবং অসংখ্য মানুষ এতে শোক ও দোয়ার বার্তা যোগ করছেন।
এর আগে, বিএনপির মিডিয়া সেল নিশ্চিত করে যে, বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৬টার দিকে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
গত ২৩ নভেম্বর ফুসফুসের সংক্রমণজনিত শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। পরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি কিডনি, লিভার, আর্থ্রাইটিস ও ডায়াবেটিসসহ একাধিক পুরনো জটিলতা দেখা দেয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেয়া হয়।
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী এবং পাকিস্তানের বেনজির ভুট্টোর পর মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় নারী প্রধানমন্ত্রী। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)কে নেতৃত্ব দিয়েছেন দৃঢ়তা ও আপসহীনতার সঙ্গে।
১৯৮১ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি তিনি বিএনপিতে যোগ দেন। পরবর্তী সময়ে স্বৈরশাসনবিরোধী আন্দোলনসহ নানা রাজনৈতিক সংগ্রামে তার নেতৃত্বে বিএনপি দেশের রাজনীতিতে একটি শক্ত অবস্থান তৈরি করে। ১৯৮৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হওয়ার পর কয়েক দশক ধরে তিনি ছিলেন দলের প্রধান অভিভাবক ও নেতৃত্বের প্রতীক। বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শুধু একটি রাজনৈতিক দলের নয় বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল এমনটাই মনে করছেন অনেকেই।
পিএ/এসএন