জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। জানাজাস্থল ও আশপাশের বিস্তীর্ণ এলাকায় মানুষের ঢল নামায় পুরো ঢাকাই পরিণত হয় এক বিশাল জানাজার মাঠে।
বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ছাড়াও বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, মিরপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া হয়ে খামারবাড়ি ও বিজয় স্মরণীসহ আশপাশের সব সড়ক মানুষের ভিড়ে সয়লাব হয়ে যায়। এমনকি এসব এলাকার অলিগলিতেও জানাজায় অংশ নিতে আসা মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা যায়।
জানাজায় অংশ নিতে আসা মুসল্লিরা জানান, এর আগে গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের দিন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও সংসদ ভবন এলাকায় এত মানুষের সমাগম দেখা গিয়েছিল। তাদের মতে, বেগম খালেদা জিয়া যে কেবল বিএনপির নেত্রী নন, বরং গণমানুষেরও নেত্রী ছিলেন—তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই জানাজায় মানুষের অভূতপূর্ব উপস্থিতিতে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা একজন বলেন, মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতেই জানাজায় অংশ নিতে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিই। ভোরে কলাবাগানে নেমে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে চলে আসি। ভেবেছিলাম খুব ভোরে এসে হয়তো আমিই প্রথমদের একজন হবো। কিন্তু এসে দেখি তীব্র শীতের মধ্যেই হাজার হাজার মানুষ আগে থেকেই এখানে উপস্থিত।
কুমিল্লা থেকে আগত জোবায়ের বলেন, ভোরে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। মানুষের ঢলের কারণে নিউমার্কেট থেকে হেঁটে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আসতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গতকাল গণতন্ত্রের মায়ের মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে সামলাতে পারিনি। আমরা চেয়েছিলাম, তিনি সুস্থ হয়ে ফিরে এসে আবারও দেশের নেতৃত্ব দেবেন। কিন্তু তিনি আমাদের দেশকে অভিভাবকহীন করে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলেন।
এদিকে, অনেকেই বেগম খালেদা জিয়ার এই জানাজাকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জানাজাগুলোর একটি হিসেবে আখ্যায়িত করছেন। নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা সম্ভব না হলেও ধারণা করা হচ্ছে, জানাজায় কয়েক মিলিয়ন মানুষের উপস্থিতি ছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৩ নভেম্বর থেকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোরে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাকে রাজধানীর জিয়া উদ্যানে প্রয়াত স্বামী শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে সমাহিত করা হবে।
ইউটি/টিএ