টানা পাঁচ রাত ঘুমের ঘাটতি হলে তা মানুষের মধ্যে আনন্দদায়ক এবং নিরপেক্ষ চিত্র সমূহ বিরূপভাবে দেখার প্রবণতা বাড়িয়ে দেয়। পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব নেতিবাচক সংবেদনশীলতা বৃদ্ধি করে বা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
সম্প্রতি স্লিপ রিসার্চ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় এমনটাই দাবি করেছেন ইতালির গবেষকরা।
রাতে ঠিকমত ঘুম না হলে মেজাজ খিটখিটে ও হতাশ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় জানিয়ে গবেষণায় বলা হয়েছে, ঘুমের অভাব একজন ব্যক্তির মানসিক প্রতিক্রিয়াগুলোকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করে। ঘুমের অভাব ব্যক্তির কর্মক্ষমতা এবং সেইসাথে সংবেদনশীল অবস্থাকেও প্রভাবিত করতে পারে।
আধুনিক সমাজে মানুষের মধ্যে ঘুমের ঘাটতি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটি মানসিক সংবেদনশীলতায় ঘুম স্বল্পতার প্রভাব সম্পর্কে গবেষকদের আগ্রহের প্রধান কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) হিসাব মতে, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৩৫ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি প্রতি রাতে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঘুমান।
গবেষণার স্বার্থে টানা পাঁচ রাত স্বাভাবিক ঘুমের পরে এবং টানা পাঁচ রাত অপর্যাপ্ত ঘুমের পরে গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের ‘মনোরম এবং নিরপেক্ষ’ চিত্র সমূহ দেখানো হয়। ফলাফলে দেখা যায়, তুলনামূলকভাবে অপর্যাপ্ত ঘুমের পরে অংশগ্রহণকারীরা এইসব চিত্রে বেশি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
এর মধ্য দিয়ে গবেষকরা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, ঘুমের অভাব মানুষের মধ্যে নেতিবাচক মানসিক পক্ষপাতিত্ব চাপিয়ে দেয়। এই তথ্য দৈনন্দিন জীবনের পাশাপাশি চিকিৎসাক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে গবেষকদের দাবি।
এ বিষয়ে ইতালির এল’কুইলা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড্যানিয়েলা টেম্পেস্তা বলেন, “অপর্যাপ্ত ঘুম নেতিবাচক সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে সংবেদনশীল উদ্দীপনাটিকে নেতিবাচক হিসাবে মূল্যায়ন করার প্রবণতা বৃদ্ধি পায়।”
এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে দৈনন্দিন জীবনে যারা ঘুম ঘাটতিতে ভুগছেন, তাদের মধ্যে স্বাভাবিক জীবনের নানা অনুভূতি নেতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করার একটি স্বাভাবিক প্রবণতা সৃষ্টি হয়।
গবেষণায় বলা হয়েছে, এই অনুসন্ধান প্রমাণ করে যে, ঘুমের অভাব মানসিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে সক্ষম, সম্ভবত যা আমাদেরকে সামগ্রিকভাবে আরও নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির দিকে ঠেলে দেয়। তথ্যসূত্র: মেডিকেল নিউজ টুডে।
টাইমস/এনজে