মধ্য এশিয়ার প্রাচীন সভ্যতা ধ্বংসের দায় চেঙ্গিস খানের নয়

১২২১ সালে মঙ্গোল শাসক চেঙ্গিস খান মধ্য এশিয়ার খারিজমিয়ান সম্রাজ্য দখল করে নেয়। বলা হয়ে থাকে এ সময় মঙ্গোলদের বর্বরতার কারণে ধ্বংস হয়ে যায় মধ্য এশিয়ার নদী বিধৌত অঞ্চলে গড়ে ওঠা তৎকালীন সময়ের অন্যতম সমৃদ্ধ সভ্যতার। বন্যার পানি চাষের কাজে ব্যবহারের কৌশল রপ্ত করে কৃষি বিপ্লবের মাধ্যমে এই অঞ্চলের লোকের নিজেদের সমৃদ্ধ করেছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই ত্রয়োদশ শতাব্দীর শুরুতে ওই সভ্যতা বিলীন হয়ে যায়।

তবে সম্প্রতি প্রকাশিত নতুন একটি গবেষণার তথ্য মতে, মঙ্গোল আক্রমণ বা চেঙ্গিস খান নয় এই সভ্যতা ধ্বংসের জন্য দায়ী ছিল জলবায়ুর পরিবর্তন। দীর্ঘদিনের নদীর গতিশীলতা, সেচ কাজে ব্যবহৃত প্রাচীন নালা ব্যবস্থা প্রভৃতি বিশ্লেষণ করে গবেষকগণ বলছেন শুষ্কতা, নদীর পানি কমে যাওয়া প্রভৃতি প্রকৃতিগত কারণে এই সভ্যতার বিলোপ ঘটে। এই গবেষণার মধ্য দিয়ে এতদিন যাবত প্রচলিত ঐতিহাসিক সত্যকে নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করা হলো।

যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব লিঙ্কনের গবেষকদের মতে, জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে নদীর পানি কমে যাওয়ায় চাষাবাদ ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হয়, এর ফলে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা এক সময় সমৃদ্ধ নগর সমূহ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিল।

এই গবেষণার ড. প্রধান মার্ক ম্যাকলিন ইউনিভার্সিটি অব লিঙ্কনের নদী ব্যবস্থা ও বৈশ্বিক পরিবর্তন বিষয়ক অধ্যাপক এবং লিঙ্কন সেন্টার ফর ওয়াটার এন্ড প্ল্যানেটারি হেলথ এর পরিচালক। তিনি বলেন, ‘আমাদের গবেষণা বলছে চেঙ্গিস খান নয়, মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই মধ্য এশিয়ার নদী বিধৌত প্রাচীন সভ্যতার বিনাশ ঘটে।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা দেখতে পেয়েছি যে ৭ম এবং ৮ম শতাব্দীতে আরবদের অআগ্রাসনের পরেও খুব দ্রুত এই অঞ্চলের লোকেরা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু মঙ্গোল আক্রমণের সময় ও পরবর্তীকালে দীর্ঘ সময় ধরে দেখা দেয়া খরার কারণে এবং আক্রমণের ফলে লোকবল কমে যাওয়ায় সেচ ব্যবস্থা পুনর্নির্মাণ করতে না পারার ফলে স্থানীয়দের টিকে থাকার সক্ষমতা ব্যাপক ভাবে হ্রাস পায়।’

গবেষকরা বর্তমান কাজাখস্তানে অবস্থিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ উতরার নগরীর প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও সেচ ব্যবস্থা বিশ্লেষণ করেছেন। এক সময় সিল্করোডে অবস্থিত এই নগরীকে ঘিরে ব্যবসা বাণিজ্যের কেন্দ্র গড়ে উঠেছিল। এছাড়াও এরিস নদীর গতিশীলতার ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করা হয়।

তথ্যসূত্র: সাইন্স ডেইলি

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
সব প্রকল্পের টেন্ডার অনলাইনে হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা Sep 17, 2025
img
ভারতে সেনাবাহিনীর মতো ইউনিফর্ম পরে ব্যাংক থেকে ২০ কোটি রুপির স্বর্ণ লুট Sep 17, 2025
img
৪০ বছরে ব্রাজিল দলে ফিরতে পারেন সিলভা, ইঙ্গিত আনচেলত্তির Sep 17, 2025
img
কাউকে নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার : তাবিথ আউয়াল Sep 17, 2025
img
প্রথমবার টি-টোয়েন্টি সিরিজে মাঠে নামছে ইংল্যান্ড-আয়ারল্যান্ড Sep 17, 2025
img
ছবির ট্রেলারে দেখা মিলল হাসিনার! মৈত্রীর বার্তা দিলেন পরিচালক Sep 17, 2025
img
প্লট জালিয়াতি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ৩০ সেপ্টেম্বর Sep 17, 2025
img
রাজধানীর সাতরাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক Sep 17, 2025
img
জামায়াত নেতার পদ স্থগিত Sep 17, 2025
img
নির্বাচনে অনীহা থেকেই তাদের কর্মসূচি : আমীর খসরু Sep 17, 2025
img
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সর্বনাশ করছেন আমোরিম : রুনি Sep 17, 2025
img
অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের, নেই স্যান্টনার Sep 17, 2025
img
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে বাস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাল ২ Sep 17, 2025
img
প্রতিদিন চুল পড়ার আতঙ্কে ভুগছেন দীপিকা Sep 17, 2025
img
এখন আন্দোলন ডাকার অর্থ আলোচনার টেবিলকে অসম্মান করা : আমীর খসরু Sep 17, 2025
img
সুইডেনে ১৫ লাখ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস Sep 17, 2025
img
সম্পর্ক জোরদারে সৌদি সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী Sep 17, 2025
img
অভিনয়ের পাশাপাশি ফ্যাশন আইকন হিসেবেও সকলের পছন্দ হানিয়া আমির Sep 17, 2025
img
এটা নতুন ভারত, কাউকে ভয় পায় না: মোদি Sep 17, 2025
img
সরকার ডিসেম্বরে বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দিলে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে : রুহিন হোসেন Sep 17, 2025