মায়ের চেয়ে মেয়ে মাত্র এক বছরের ছোট

ঘটনার সূত্রপাত ১৯৯২ সালের ১৪ অক্টোবরে। বিল ক্লিংটন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবার কয়েক সপ্তাহ আগে একটি শিশুর ভ্রুণ ফ্রিজিং বা শীতল অবস্থায় সংরক্ষণ করা হয়। অতপর দীর্ঘ ২৭ বছর পর গত ২৬ অক্টোবর সেই শিশুটি পৃথিবীতে জন্ম নিয়েছে।

এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২৮ বছর বয়সী টিনা গিবসনের গর্ভে শিশুটিকে স্থানান্তর করা হয়েছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এর মধ্য দিয়ে মলি নামের শিশুটি দীর্ঘ সময় পর জন্ম লাভের রেকর্ড সৃষ্টি করলো।

মজার বিষয় হলো, মলির মায়ের জন্মের মাত্র ১ বছর পর মলির ভ্রুণ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই দিক থেকে বিবেচনা করলে সে তার মায়ের প্রায় সমবয়সী।

স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে, ভ্রুণ সংরক্ষণের এই পদ্ধতি ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক মাত্রায় ব্যবহৃত হবে। ফলে অদূর ভবিষ্যতে এটি একটি সাধারণ ঘটনা হয়ে দাড়াতে চলেছে।

ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন মেডিকেল সেন্টারের অধ্যাপক ড. গিনি রায়ান বলেন, “বিভিন্ন কারণে মানুষ ভ্রুণ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়। কেউ কেউ এটি পরবর্তীতে নিজেই ব্যবহার করে। বর্তমানে হাজার হাজার ভ্রুণ এভাবে সংরক্ষিত হচ্ছে।”

অর্থাৎ পরিকল্পিত সময়ের আগে কেউ গর্ভবতী হয়ে পড়লে গর্ভপাতের পরিবর্তে তারা ভ্রুণ সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। পরবর্তীতে সেটি নিজে ব্যবহার করতে পারেন বা অন্য কাউকে দান করতে পারেন। এর ফলে সাধারণ ভাবে বাবা-মা হতে অক্ষম অনেক দম্পত্তিও সন্তান লাভ করতে সক্ষম হবে।

গবেষকদের মতে, এক বছর যে প্রক্রিয়াতে ভ্রুণ সংরক্ষণ করতে হয়, ২৭ বছর সংরক্ষণ করতে হলে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। সংরক্ষিত ভ্রুণ থেকে গর্ভধারী মায়েদের শিশু মৃত্যুর হারও সময়ের সাথে অনেক কমে এসেছে।

রায়ানের মতে, “সংরক্ষিত ভ্রুণ থেকে জন্মানো শিশুর দীর্ঘ মেয়াদী কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে এমন কোনও প্রমাণ নেই। বরং দীর্ঘ মেয়াদী ভ্রুণ সংরক্ষণের সাথে সন্তান জন্মদানকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করে না।”

বর্তমানে স্লো ফ্রিজ ও ভিত্রিফিকেশন এই দু’টি পদ্ধতিতে ভ্রুণ সংরক্ষণ করা হয়। স্লো ফ্রিজ পদ্ধতিটি দীর্ঘ দিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং এক্ষেত্রে নতুন সংযোজন ভিত্রিফিকেশন।

রায়ানের মতে, স্লো ফ্রিজ পদ্ধতিটি ব্যবহারের শিশু মৃত্যুর ঝঁকি বেশি থাকলেও সেই সমস্যা দূর করেছে নতুন পদ্ধতি। এর ফলে ভ্রুণ সংরক্ষণ ও গ্রহণের ব্যাপারেও লোকের আস্থা বৃদ্ধি পেয়েছে।

এর ফলে ধারণা করা হচ্ছে অচিরেই ভ্রুণ সংরক্ষণ ও সংরক্ষিত ভ্রুণ গ্রহণের বিষয়টি আরও বেশি বৃদ্ধি পাবে। এই পদ্ধতি ব্যবহার বৃদ্ধি পেলে তা সেচ্ছায় গর্ভপাতকে বহুলাংশে হ্রাস করতে সক্ষম হবে। একই সাথে সন্তান লাভের সুযোগ লাভ করবে অনেকে।

তথ্যসূত্র: হেলথলাইন

 

টাইমস/এনজে/এসএন

Share this news on:

সর্বশেষ

img
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক ম্যাচ জিতলেই যে সুখবর পাবে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
রাজধানীতে ডিএনসিসির মশক নিধন অভিযান শুরু Jul 02, 2025
img
সোমালিয়ায় বিমানবন্দরে সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত Jul 02, 2025
img
১৮ মিনিটেই মিয়ানমারের জালে বল, ১-০ তে এগিয়ে বাংলাদেশ Jul 02, 2025
img
শাহরুখের নামে ‘কুকুর পালা’ বিতর্কে জবাব দিলেন আমির খান Jul 02, 2025
img
জুলাই পদযাত্রায় এনসিপি নেতাদের কাঁঠাল খাইয়ে আপ্যায়ন করলেন কৃষক Jul 02, 2025
img
কোরিয়ান অভিনেত্রী লি সিও-ই আর নেই Jul 02, 2025
img
ডর্টমুন্ড-রিয়াল ম্যাচে দেখা হচ্ছে না বেলিংহাম ভাইদের Jul 02, 2025
img
বেবিচকের নতুন চেয়ারম্যান মোস্তফা মাহমুদ Jul 02, 2025
img
সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জামিন নামঞ্জুর Jul 02, 2025
img
শিক্ষার্থী ভিসায় ‘সময়সীমা’ আরোপ করতে চান ট্রাম্প Jul 02, 2025
img
শিক্ষার্থীদের আঘাত করার পরিণতি ভালো হবে না : নাহিদ Jul 02, 2025
img
যে কারণে প্রথম ওয়ানডেতে মাঠে নেই রিশাদ Jul 02, 2025
img
৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পালন না করার সিদ্ধান্ত Jul 02, 2025
img
৫ আগস্ট সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা Jul 02, 2025
img
সব সময় দর্শকদের মনে বেঁচে থাকতে চাই : সাফা কবির Jul 02, 2025
img
দাম কমলো এলপি গ্যাসের Jul 02, 2025
img
ফারিণের এক নম্বর স্বামীর খোঁজ জানতে চাইলেন নিশো Jul 02, 2025
img
পুত্রের জন্মসনদে ধর্ম ‘ফাঁকা’ রেখে সমাজকে নতুন বার্তা দিলেন বিক্রান্ত ম্যাসি Jul 02, 2025
img
শুরুতেই সাকিব-তাসকিনের বোলিং তোপে লঙ্কানরা Jul 02, 2025