ছাত্রলীগ নিয়ে কিছু কথা...

বাংলাদেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। যাদের একটি গৌরবময় ইতিহাস রয়েছে। তাদের বিভিন্ন কাজের কারণে নানাভাবে আলোচিত ও সমালোচিত দলটি। ছাত্রলীগ নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন বাংলাদেশ টাইমসের নিউজ রুম এডিটর শাহজাহান নবীন

হযরত ওমর (রা.) ও বাদশাহ হারুণের মহানুভবতার অনেক গল্প আমাদের জানা। ওমর (রা.) নিজের কাধে খাবারের বস্তা বয়ে অনাহারীর বাড়িতে খাবার পৌছাতেন। আমরা এসব গল্প থেকে অনেক শিখেছি। হয়তো এরকম অসংখ্য গল্প আমাদের মানবিক করে তুলেছে।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রাতের আঁধারে ছিন্নমূল মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন খাবারের প্যাকেট নিয়ে। রমজান উপলক্ষে মাসব্যাপী সেহরি ও ইফতার বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে সংগঠনটি। কয়েকটি ছবি ফেসবুকের কল্যাণে সামনে এলো, দেখলাম। ভালো লাগলো। মনে হলো, আগামীর বাংলাদেশ হয়তো নিরাপদেই থাকবে। ছাত্রলীগের সাবেক নেতা গোলাম রাব্বানী ভাইকে দেখলাম একই কাজ করছেন। এগুলো ভালো কাজ। প্রশংসা পেতেই পারে। তাদের এ উদ্যোগকে আমি প্রশংসা করে ছোট করতে চাই না।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য সেহরি বিতরণ করছেন। কি অসাধারণ সেই দৃশ্য। এটাই তো অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। কিন্তু নাহিয়ান খান জয় আগামীকাল মন্দির অথবা গীর্জায় সহায়তা নিয়ে গেলে দেখবেন, অনেকের জাত যাবে। অনেকেই হয়তো তাকে কটাক্ষ করবেন। বাংলাদেশে এমনটাই ঘটে। আমাদের কথিত অতিধার্মিক শ্রেণি ধর্মের জন্য যে কতটা ভয়ঙ্কর, তা বলে বোঝানো যাবেনা। এটা বরং তাদের ছোট মানসিকতা। এটাই মানবিকতার অন্তরায়।

শায়খ আহমাদুল্লাহর সংস্থা ইফতার ও সেহরি বিতরণের উদ্যোগ নিয়েছে। এছাড়া দেশের বিভিন্ন এলাকায়, পাড়া-মহল্লায়, ছোট ছোট উদ্যোগে রমজানে মানবিক সহায়তা চালু থাকবে। এগুলো প্রশংসার উর্ধ্বে। ভালো কাজের প্রচারণা হওয়া দরকার। তাতে মানুষের খারাপ দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টাতে পারে।

ছাত্রলীগ ছাড়া অন্যান্য সকল ছাত্রসংগঠন ও রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনগুলোও মহতী উদ্যোগ নিয়ে হাজির হতে পারে। তেমনটিই আশা করছি। দেশের প্রথম সারির ছাত্রসংগঠন গুলোর প্রতি আহ্বান থাকবে, মানুষের পাশে দাড়ান। আসুন সবাই সবার ভালো জিনিস নিয়ে আলোচনা করি।

আমি মনে করি, সকল ধর্মের বিশেষ অনুষ্ঠান, উৎসবে সকলের উচিত সহায়তা করা। সহযোগিতার হাত বাড়ানো। আমাদের অন্তরকে প্রশস্ত করা উচিত৷ আস্তিক, নাস্তিক, হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খৃষ্টানসহ সকল ধর্মের বর্ণের মানুষকে লালনপালন করছেন একজন স্রষ্টা। সেই মহান স্রষ্টা কাউকে না খাইয়ে রাখেননি। কিন্তু আমরা? মতের ভিন্নতা দেখলেই তাকে মুরতাদ, দালাল, কাফের, চেতনাবিরোধী, দেশবিরোধী বলে ট্যাগ লাগাচ্ছি। এতে আখেরে আমাদের বন্ধন ভেঙে যাচ্ছে। আমরা সামাজিক থেকে অসামাজিক মানুষে পরিণত হচ্ছি। এটা বদলানো দরকার।

Share this news on: