গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ছয় হাজার ৭৮০ আত্মসাতের অভিযোগে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ মঙ্গলবার (৩০ মে) দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয় সংস্থার উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের উপ-মহাপরিদর্শক গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ সংবলিত একটি প্রতিবেদন দুদকে পাঠানো হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরেই ২০২২ সালের ২৮ জুলাই অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানান দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে বণ্টনের জন্য সংরক্ষিত লভ্যাংশের পাঁচ শতাংশ অর্থ লোপাট, শ্রমিক-কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধের সময় অবৈধভাবে অ্যাডভোকেট ফি ও অন্যান্য ফির নামে ছয় শতাংশ অর্থ কাটা, শ্রমিক কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলে বরাদ্দ করা সুদসহ ৪৫ কোটি ৫২ লাখ ১৩ হাজার ৬৪৩ টাকা বিতরণ না করে আত্মসাৎ। এ ছাড়া, কোম্পানি থেকে দুই হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা মানিলন্ডারিংয়ের উদ্দেশে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরের মাধ্যমে আত্মসাৎ।
অভিযোগ অনুসন্ধানে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে দুদক। কমিটিতে দুদকের তৎকালীন পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনকে তদারককারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—দুদক উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান, সহকারী পরিচালক জেসমিন আক্তার ও নূরে আলম সিদ্দিকী।
অভিযোগ অনুসন্ধানে গত বছরের আগস্টের বিভিন্ন সময়ে এমডিসহ ছয় জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক। অনুসন্ধান পর্যায়ে বারবার নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ মুহাম্মদ ইউনূসের প্রসঙ্গ আসে। গত বছরের ২৩ নভেম্বর দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক প্রশ্নের জবাবে গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) নাজমুল ইসলাম গণমাধ্যমে জানিয়েছিলেন, শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ব্যক্তিগতভাবে কোনো সম্পৃক্ততা নেই।
এ সময় গ্রামীণ টেলিকমের এমডি বলেন, ‘বোর্ডের মাধ্যমে সব সিদ্ধান্ত হয়েছে, ব্যক্তিগতভাবে কোনো কিছুর সঙ্গে ড. ইউনূস জড়িত নন। এ ছাড়া, নিয়ম মেনেই শ্রমিকদের অর্থ ছাড় করা হয়েছে।’
