যুদ্ধবিরতি শুরু হবে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় : হামাস

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের সাথে ইসরায়েলের বহুল প্রত্যাশিত যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হবে। বুধবার কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে হামাসের কর্মকর্তা মুসা আবু মারজুক চুক্তি কার্যকরের এই সময় জানিয়েছেন।

তিনি বলেছেন, হামাস এবং ইসরায়েলের মাঝে সাময়িক যুদ্ধবিরতি চুক্তি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টা থেকে কার্যকর হবে। গাজায় বন্দী ৫০ জিম্মির মুক্তি ও চারদিনের যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েল এক চুক্তিতে পৌঁছানোর ঘোষণা দেওয়ার পর হামাসের পক্ষ থেকে চুক্তিটি কার্যকরের সময় জানানো হয়েছে।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে শত শত ইসরায়েলিকে হত্যা এবং ২৪০ জনকে ধরে নিয়ে গাজায় জিম্মি করে রেখেছে হামাসের যোদ্ধারা। ওই দিন শুরু হওয়া যুদ্ধে ইসরায়েলের নির্বিচার হামলায় গাজায় ১৪ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনির প্রাণহানি ঘটেছে। আর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছেন ১ হাজার ২০০ জনের বেশি।

উপত্যকায় চলমান তীব্র লড়াই বন্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এক চুক্তিতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে হামাস এবং ইসরায়েলের মাঝে মধ্যস্থতা করছে কাতার এবং মিসর। সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সাথে দফায় দফায় আলোচনার পর মঙ্গলবার শিগগিরই হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি চুক্তি হতে পারে বলে জানায় কাতার। পরে একই দিন রাতে ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন জরুরি মন্ত্রিসভার বৈঠকে হামাসের সাথে যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন পায়।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, চার দিনের যুদ্ধবিরতির সময়কালে ৫০ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুকে মুক্তি দেবে ইসরায়েল।

আবু মারজুক বলেছেন, জিম্মিদের অধিকাংশেরই বিদেশি নাগরিকত্ব রয়েছে। তবে তাদের ইসরায়েলি পাসপোর্ট আছে কি না তা জানাতে পারেননি তিনি। ইসরায়েল বলেছে, হামাসের কাছ থেকে যারা মুক্তি পাবেন, তারা ইসরায়েলি নাগরিক অথবা বাসিন্দা। তবে হামাসের পক্ষ থেকে চুক্তি কার্যকরের ঘোষণা দেওয়া হলেও ইসরায়েল এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

৫০ জিম্মিকে মুক্তির বিনিময়ে ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী ১৫০ ফিলিস্তিনির মুক্তি এবং গাজা উপত্যকায় মানবিক ত্রাণ সরবরাহের অনুমতির শর্তে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল এবং হামাস।

হামাসের এক বিবৃতিতে যুদ্ধবিরতি চুক্তি কেমন হতে পারে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রথমত গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলের আকাশে ইসরায়েলের সব ধরনের ড্রোন এবং যুদ্ধবিমানের কার্যক্রম চারদিনের জন্য পুরোপুরি বন্ধ থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর উত্তর গাজার আকাশে ইসরায়েলি ড্রোন ও বিমানের কার্যক্রম চুক্তির মেয়াদকালে প্রত্যেকদিন স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

যুদ্ধবিরতির সময় গাজায় থাকা ইসরায়েলি সব সৈন্য এবং ট্যাংক তাদের অবস্থানে থাকবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তবে বিরতি চলাকালে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কারও ওপর হামলা অথবা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারবে না। চুক্তি চলাকালে প্রত্যেকদিন মিসরের রাফাহ সীমান্ত ক্রসিং দিয়ে ত্রাণবাহী ২০০ লরি, চারটি জ্বালানি ট্যাংকার এবং চারটি গ্যাস বহনকারী লরি গাজায় প্রবেশের অনুমতি পাবে।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সময়ে চীন অবদান রাখতে পারে: চীনা রাষ্ট্রদূত May 12, 2025
img
নওগাঁয় কালবৈশাখীর তান্ডব, প্রাণ গেল ১ জনের May 12, 2025
img
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করছে না পাকিস্তান: পাক সেনাবাহিনী May 12, 2025
img
আজ টিভি-অনলাইনে যেসব খেলা দেখবেন May 12, 2025
img
গন্ধগোকুলের মল থেকে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে দামি কফি ‘কপি লুয়াক’ May 12, 2025
img
ভারত বাহ্যিক সমস্যাকে অভ্যন্তরীণ করার চেষ্টা করছে : পাকিস্তান May 12, 2025
img
হাসনাতকে অভিবাদন জানালেন সারজিস আলম May 12, 2025
img
পুরাতন রাজনীতি দিয়ে দেশের কোনো সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়- ব্যারিস্টার ফুয়াদ May 12, 2025
যে আক্ষেপ থেকে গেল তামিমের ১৫ বছরের ক্যারিয়ারে May 12, 2025
চার্লস ডিকেন্সের বিখ্যাত উপন্যাস নিয়ে আসছে ‘উৎসব’ May 12, 2025