কোটা পদ্ধতির সমাধান আদালতের মাধ্যমেই করতে হবে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কোটা বাতিল সর্বোচ্চ আদালতের রায় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সমাধানটাও আদালতের মাধ্যমেই করতে হবে অন্যথায় আদালত অবমাননা হবে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দুপুরে প্রেসক্লাবে আয়োজিত ‘ভারসাম্যের পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

যাদের নিজেদের কিছু করার থাকে না, তারা পরজীবী হয় মন্তব্য করে হাছান মাহমুদ বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ও শিক্ষক আন্দোলনে বিএনপি ঢুকেছে। সরকার ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে কোটা বাতিল করেছে। সে কোটা ব্যবস্থা সরকার পুর্নবহাল করে নাই। এটি সর্বোচ্চ আদালত রায় দিয়েছে। আন্দোলনটা নিশ্চয়ই আদালতের বিরুদ্ধে হচ্ছে। সমাধানটাও আদলতের মাধ্যমেই করতে হবে অন্যথায় আদালত অবমাননা হবে।

নিজেও শিক্ষক ছিলেন বলে আন্দোলনকারী শিক্ষকদের প্রতি সহানুভূতি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বজনীন পেনশন একটি চমৎকার ব্যবস্থা। এর আওতায় দিনমজুরও আসবে। এখন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়িত্বশাসিত তারা আসছে। স্বল্প আয়ের মানুষদের বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হবে। প্রবাসীরাও এই পেনশনের আওতায় আসবে।

মন্ত্রী বলেন, এখন হয়তো বুঝার ঘাটতি হচ্ছে বলে সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আজকে শিক্ষকরা বসবেন, সেখানে একটা সমাধান হবে।

ভারতের সঙ্গে চমৎকার সম্পর্ক তেমনি চীনের সঙ্গেও। রাশিয়ার সঙ্গে যেমন চমৎকার সম্পর্ক তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও। বিশ্বযুদ্ধের পরে পৃথিবী দুই কেন্দ্রিক ছিলো রাশিয়ার পর এক কেন্দ্রিক হয়ে যায়। এখন আর এক কেন্দ্রিক বলা যায় না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রেখে এগিয়ে যাওয়া সহজ কাজ নয়। কিন্তু এই দুরূহ কাজটি বঙ্গবন্ধু কন্যা করে যাচ্ছেন।

মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক রাষ্ট্র সমর্থন করেনি, স্বীকৃতিও দেইনি কিন্তু তারাও এখন উন্নয়ন সহযোগী। চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। ভারতের সঙ্গে যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন, গত ১৫ বছরে যে বিস্তৃত হয়েছে, ভারতের হাইকমিশন পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি ভিসা ইস্যু করে বাংলাদেশে। আমরাও পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি ভিসা ইস্যু করি ভারতের। এতেই প্রমাণিত হয় মানুষে মানুষের সম্পর্ক কত গভীর, বলেন তিনি।

ইউরোপে কোন সীমান্ত নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ট্রেনে কেউ ঘুমিয়ে গেলে বেলজিয়াম না গিয়ে দেখবে জার্মানি চলে গেছে। কখন যে আরেক দেশে ঢুকে গেছেন বুঝা যায় না। অপারেটর পরিবর্তন হওয়ায় মোবাইলে মেসেজ আসলে তখন বুঝা যায়। সেখানে সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়ে গেছে?

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে কানেক্টিভিটি বাড়ানোর জন্য সমঝোতা হয় তখন বিএনপি রব তুলেছে কেন? অনেকে বলে, হনুমান যখন ঢাক দেই তখন সব হনুমানও ঢাক দেয়, আমি কাউকে তুলনা করছি না। দুষ্টু লোকদের মুখ বন্ধ করা যায় না।

এখন দেশে অবাধ মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, যাদের নেত্রী সাবমেরিনের সাথে যুক্ত হলে সার্বভৌমত্ব নষ্ট হয়ে যায় বলে তারা এটাই বলবে। শুধু ভারতের সঙ্গে নয় বরং নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে ভারতের ওপর দিয়ে কানেক্টিভিটি বাড়বে। আমরা আঞ্চলিক কানেক্টিভিটির কথা বলছি, এতে বাংলাদেশ মানুষ উপকৃত হবে।

বিএনপির সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, বিএনপির নেতারা দশ মিনিটে এয়ারপোর্টে গিয়ে বলে শেখ হাসিনা কোন উন্নয়ন করেনি। পদ্মা সেতু দিয়ে ওপার গিয়ে জনসভা করে বলে কোন উন্নয়ন হয়নি। মেট্রোরেলে এসির বাতাস খেয়ে প্রেসক্লাব, সচিবালয়ের সামনে এসে বলে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কিছু হয়নি। অথচ তাদের অনেকেই আবার মেট্রোরেলে এসেছেন।

বিএনপির মধ্যে অস্থিরতা ভর করছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বিএনপিতে এখন তারেক আতঙ্ক, তারেক ভুত পেয়ে বসেছে। কখন কার পদবি চলে যায়। মধ্যরাতে উঠে দেখে পদ নাই।

সাপ্তাহিক গণবাংলা ও বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত এ আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য বলরাম পোদ্দার প্রমুখ।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ফিফা চাইলে ৬৪ দলের বিশ্বকাপ আয়োজন করতে রাজি সৌদি আরব Apr 20, 2025
img
সিরাজগঞ্জে মামা-মামি-বোনকে হত্যার দায়ে যুবকের মৃত্যুদণ্ড Apr 20, 2025
img
নববধূ রেখাকে জুতাপেটা করে বরণ করেছিল শাশুড়ি Apr 20, 2025
img
নগরীর যানজট নিরসনে হকার ব্যবস্থাপনা জরুরি : চসিক মেয়র Apr 20, 2025
img
আজ খারাপ খেলেছি তাই বলা যাবে না তারা চেষ্টা করছে না : সালাউদ্দিন Apr 20, 2025
img
নারীর মরদেহের ময়নাতদন্ত নারী চিকিৎসক দিয়ে কেন নয় প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল জারি Apr 20, 2025
img
সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বিপুর ৪৫ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, গাড়ি-এ্যাপার্টমেন্ট জব্দ Apr 20, 2025
img
চীনের সঙ্গে ঐতিহাসিক সম্পর্ক ২ হাজার বছরের পুরোনো : ঢাবি উপাচার্য Apr 20, 2025
img
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের নতুন ডিজি শফিউল বারী Apr 20, 2025
img
আসিফ মাহমুদ ও মাহফুজ আলমের পদত্যাগ দাবি করলেন নুর Apr 20, 2025