দীর্ঘ ১৪ বছর পর প্রকাশ্যে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ৮টায় রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সদস্য সম্মেলনের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে সারা দেশ থেকে ছাত্রশিবিরের সদস্য পর্যায়ের জনশক্তি সরাসরি অংশ নিয়েছেন।
জানা গেছে, এ সম্মেলনেই ২০২৫ সেশনের জন্য নির্বাচিত কেন্দ্রীয় সভাপতির নাম ঘোষণা করা হবে। এজন্য গত ২৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টা থেকে সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) রাত ৯টা পর্যন্ত সদস্যরা অনলাইনে ভোট দিয়েছেন।
সম্মেলন উপলক্ষ্যে উদ্যান এলাকা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। দীর্ঘদিন পর প্রকাশ্যে সমাবেশ করতে পেরে সবাই ছিলেন উচ্ছ্বসিত। সারাদেশ থেকে আসা জনশক্তিদেরও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সদস্য সম্মেলনে অংশ নিতে দেখা গেছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শিবিরের ঐতিহ্য অনুযায়ী শহীদের পিতা এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। দুটি সেশনে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উন্মুক্ত সেশন ও দুপুর ২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কার্যকারী সেশন অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমবেত হয়ে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি পালন করবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। সোমবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছে তারা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংগঠনটির সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে আবির্ভূত জন-আকাঙ্ক্ষা তথা ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত কায়েমের প্রতিশ্রুতির ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ এক ঐতিহাসিক পটভূমিতে আবির্ভূত হয়েছে। হাজারও শহীদ ও আহত যোদ্ধাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি ও জন-আকাঙ্ক্ষার দলিল স্বরূপ ‘জুলাইয়ের ঘোষণাপত্র’ অত্যাবশ্যক ছিল। এই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের ঐতিহাসিক দায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ওপর বর্তায়। নানান প্রতিকূলতা সত্ত্বেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতার পক্ষে এই ঐতিহাসিক ঘোষণাপত্র প্রণয়ন ও ঘোষণার দায়িত্ব নিয়েছিল।
আরিফ সোহেল বলেন, আমাদের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের আপামর ছাত্র-জনতার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচক সাড়া সঞ্চারিত হয়েছে। এ অবস্থায় ছাত্র-জনতার আহ্বানে রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ছাত্র-জনতা এই সময়পোযোগী উদ্যোগ সাধুবাদ জানাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় ৩১ ডিসেম্বর মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো। বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের প্রতি আমাদের উদাত্ত আহ্বান- আপনারা যে উদ্দীপনায় সংগঠিত হয়েছেন, তার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আগামীকালের কর্মসূচিতে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ, অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন।