জামালপুরের দয়াময়ী মন্দির

প্রাচীনকাল থেকেই বাংলাদেশে অনেক ধর্মীয় স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। অনেক স্থাপনাই বর্তমানে দেশের ঐতিহ্যকে ধারণ করছে। তেমনি একটি ধর্মীয় স্থাপনা হলো জামালপুরের শ্রী শ্রী রীঁ দয়াময়ী মন্দির।

দয়াময়ী মন্দিরটি জামালপুর জেলা শহরের জিরো পয়েন্টে অবস্থিত। মন্দিরটি প্রায় ৩২১ বছরের পুরোনো। মন্দিরটির নাম অনুসারে স্থানটির নামও হয়েছে দয়াময়ী মোড়। প্রায় সাড়ে ছয় একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত এ মন্দির।

নবাব মুর্শিদকলি খাঁর আমলে ১৬৯৮ সালে (বাংলা ১১০৪ সনে) মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেন শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী। শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরী ছিলেন তৎকালীন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার অন্তর্গত গৌরিপুর রামগোপালপুর জমিদারের জাফরশাহী পরগানার জায়গীরদার।

পরবর্তীতে মন্দিরটি দেবোত্তর সম্পত্তি হিসেবে ঘোষণা করেন তৎকালীন রাণী শ্রীমতি নারায়ণী রায় চৌধুরী। মন্দির বিষয়ে জনশ্রুতি আছে, শ্রীকৃষ্ণ রায় চৌধুরীর ছেলে রাজা যোগেন্দ্র কিশোর রায় চৌধুরীর স্ত্রী রাধারঙ্গিনী দেবী চৌধুরানি মন্দির নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। পরে তিনি স্বামীকে বলে মন্দিরের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করান।

মন্দিরটিতে প্রাচীন ও আধুনিক সভ্যতার স্থাপত্যের নিদর্শন রয়েছে। এখানে ভিন্ন ভিন্নভাবে স্থাপন করা হয়েছে কালি মন্দির, শিব মন্দির, নাট মন্দির ও মনস দেবী মন্দির। তাছাড়া প্রধান রাস্তার পাশে রয়েছে শ্রী শ্রী রাধামোহন জিউ মন্দির। মন্দিরে রয়েছে শতবর্ষে কারুকার্যমণ্ডিত দৃষ্টিনন্দন বিভিন্ন রকমের চিত্রকর্ম।

এখানে প্রতিদিনিই পূজা-অর্চনা করতে আসেন সনাতন ধর্মবলম্বীরা। এছাড়া মন্দিরটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভিড় জমায় পর্যটকরা।

হিন্দুদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজায় এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। এছাড়াও চৈত্রমাসে ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান উৎসব হয়। উৎসব শেষে এখানে চারদিন ব্যাপী মেলা বসে।

মন্দিরটি সকাল ছয়টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। এখানে চারজন পুরোহিত ও ১২ জন কর্মচারী কাজ করেন।

যেভাবে যাবেন: ঢাকা থেকে বাসযোগে যেতে পারেন জামালপুর। ভাড়া আনুমানিক ৩০০ টাকা। সেখান থেকে ইজিবাইক বা রিকশা করে সহজে যেতে পারবেন মন্দিরে।

এছাড়া ঢাকা থেকে ট্রেন যোগে সহজেই যেতে পারবেন জামালপুর। শ্রেণিভেদে ভাড়া ১৪০ থেকে ৪০০ টাকা। রেলস্টেশন থেকে ইজিবাইক কিংবা রিকশা করে সহজেই পৌঁছে যাবেন দয়াময়ী মন্দিরে।

থাকার ব্যবস্থা: থাকার জন্য জামালপুর পাবেন বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে।

খাওয়া: খাবারের জন্যও জামালপুর রয়েছে বেশ কিছু হোটেল ও রেস্টুরেন্ট।

Share this news on: