র‌্যাব বিলুপ্ত, বিজিবি ও ডিজিএফআইকে সীমাবদ্ধের সুপারিশ জাতিসংঘের


র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‌্যাব) বিলুপ্ত করে যারা গুরুতর লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না এমন কর্মীদের স্ব স্ব ইউনিটে ফিরিয়ে দিতে আহ্বান করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর)।

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত তাদের এক প্রতিবেদনে র‌্যাবকে বিলুপ্তিসহ বিজিবি কেবল সীমান্তরক্ষা এবং প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা পরিদপ্তরকে (ডিজিএফআই) কেবল সামরিক গোয়েন্দা তৎপরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে।

এছাড়াও আনসার-ভিডিপির উপর “সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ রোধ” করে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার কাজে সহায়ক হিসেবে কাজে লাগানোর সুপারিশ করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়।

ওএইচসিএইচআর বলছে, প্রতিবেদনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, তা বাস্তবায়নে বাংলাদেশকে কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে তারা প্রস্তুত।

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ১৫ অগাস্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয়ের অনুসন্ধানী দল। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আহ্বানে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালায় জাতিসংঘের মানবাধিকার হাই কমিশনের তদন্ত দল।

প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাষ্ট্রীয় তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলো সবিস্তারে তুলে ধরা হয়েছে।

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, কোটাবিরোধী আন্দোলনকে ঘিরে ক্রম অবনতিশীল পরিস্থিতি এবং রাষ্ট্রীয় সহিংসতার প্রতিক্রিয়ায় বিক্ষোভকারীদের কিছু অংশ সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ে, যাদের বেশিরভাগ সরকারি ভবন, পরিবহন অবকাঠামো এবং পুলিশকে লক্ষ করে আক্রমণ করে।

১৯ জুলাই থেকে বিক্ষোভ শেষ হওয়া পর্যন্ত, বিজিবি, র‌্যাব এবং পুলিশ ঢাকা এবং অন্যত্র বিক্ষোভকারীদের ওপর “নির্বিচারে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে”– এমন তথ্য তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, “যার কারণে প্রতিবাদ কভার করতে আসা সাংবাদিকসহ অনেকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয় এবং আহত হয়।”

গোয়েন্দা সংস্থাগুলো আন্দোলনের দমানোর কীভাবে সম্পৃক্ত ছিল, তার একটি বর্ণনা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারের কার্যালয়।

সেখানে বলা হয়, “ডিরেক্টরেট জেনারেল অব আর্মড ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই), ন্যাশনাল সিকিউরিটি ইন্টেলিজেন্স (এনএসআই) এবং ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টার (এনটিএমসি) – এবং পুলিশের বিশেষ শাখা – গোয়েন্দা শাখা এবং কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিটিসি) প্রতিবাদকারীদের দমনের নামে সরাসরি মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিল।

Share this news on:

সর্বশেষ

img
ইসলামিক দেশগুলোয় ১ মার্চই শুরু হতে পারে রমজান Feb 13, 2025
img
রবিবার মহাসমাবেশের ঘোষণা দিলেন প্রাথমিকের নিয়োগ প্রত্যাশীরা Feb 13, 2025
img
এ বছরের ডিসেম্বরেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে: প্রধান উপদেষ্টা Feb 13, 2025
img
সৌদি ও মালয়েশিয়াগামী কর্মীদের জন্য বিশেষ ভাড়া ঘোষণা Feb 13, 2025
img
শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লিকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে ঢাকা Feb 13, 2025
img
বিশ্বমঞ্চে সহ-অধিনায়কের ভূমিকায় মিরাজ Feb 13, 2025
img
মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তর এখন তুলসী গ্যাবার্ডের অধীনে Feb 13, 2025
img
ড. ইউনূসের কাছ থেকে শিক্ষা নিই: আমিরাতের স্বাস্থ্যমন্ত্রী Feb 13, 2025
img
শিকল নয়, মানবিক হতে ট্রাম্পের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন মোদি Feb 13, 2025
img
সুস্বাস্থ্য রক্ষায় খালি পেটে দৌড়ান Feb 13, 2025