রাজধানীর আব্দুল্লাহপুর থেকে শহরের বিভিন্ন রুটে চালু হওয়া গোলাপি রঙের বাসসেবা শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। চালুর সাত দিনের মধ্যে ভেঙে পড়েছে কাউন্টার ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি। আগের মতোই যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করছে। টিকিট ছাড়াও তোলা হচ্ছে যাত্রী। রয়েছে টিকিটে ভাড়া বেশি নেওয়ার অভিযোগও।
নিয়ম মেনে নির্দিষ্ট স্টপেজ থেকে যাত্রী ওঠানামা, ভাড়া নিয়ে গণ্ডগোল না করে টিকিট শো করা, এক স্টপেজে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকাসহ বিভিন্ন কারণে এ সেবা চালু নিয়ে বেশ উৎফুল্ল ছিলেন সাধারণ মানুষ। তবে শুরুর দিন থেকেই চরম অসযোগিতা করে আসছেন বাসমালিক বা চালকরা। তারা এসব নিয়ম মানতে নারাজ। আগের মতো যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা ও চুক্তিতে বাস চালাতে চান তারা। সোমবার (৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সায়েদাবাদ এলাকায় জনপদের মোড় অবরোধ করেন বাস শ্রমিকরা।
তবে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, সড়কে যানজট নিরসন ও গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনতে কাউন্টার পদ্ধতি এবং ই-টিকেটিংয়ের বিকল্প নেই। এ পদ্ধতি চালুর ফলে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা বন্ধ হয়েছে। একই সঙ্গে বাস মালিক-শ্রমিক চুক্তি নেই। অতিরিক্ত যাত্রী বহন নিয়ে চালকদের প্রতিযোগিতাও বন্ধ। বাস চালকরা নিজেদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন। এটা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগির তা সমাধান হবে।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি উত্তরার আব্দুল্লাহপুর থেকে ঢাকার বিভিন্ন গন্তব্যের বাসে টিকিট কাউন্টার এবং ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালু হয়। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সভাপতিত্বে এক সভায় সড়কে শৃঙ্খলা, ঢাকা মহানগরে যানজট নিরসন এবং বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা হয়। পরে বাস মালিকদের সঙ্গে চালকের ট্রিপভিত্তিক চুক্তি না করে পাক্ষিক বা মাসিক ভিত্তিতে চুক্তি সম্পাদন করতে নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা। সে নির্দেশনার আলোকেই টিকিট কাউন্টার স্থাপন ও ই-টিকেটিং পদ্ধতি চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকার সড়কে আর কোনো বাস চুক্তিতে চলবে না। ক্রমান্বয়ে সব বাস ই-টিকেটিংয়ের আওতায় আনা হবে। তবে কিছু দাবিতে বাসের শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করেছিল। তাদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন সড়কে গোলাপি বাস চলছে। মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের বাইরে কারও চক্রান্ত করার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, ‘কাউন্টার পদ্ধতি এবং ই-টিকেটিং চালুর বিষয়ে পরিবহন মালিক সমিতি একমত। তবে সময়মতো নির্দিষ্ট রং করতে না পারা, ই-টিকেটিংয়ের ডিভাইস সংক্রান্ত কাজের কারণে অনেক বাস সড়কে নামেনি। চলতি সপ্তাহের মধ্যে এসব সমস্যার সমাধান হবে।’