প্রতিনিয়ত মানুষের কাজের জায়গা একটু একটু করে দখল করে নিচ্ছে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স( এআই)। এবার এ তালিকায় যোগ হলো সিঙ্গাপুরের সর্ববৃহৎ ব্যাংক ডিবিএস ।
ব্যাংকটি আগামী তিন বছরে চার হাজার পদ কমানোর ঘোষণা দিয়েছে। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বর্তমানে মানুষের সম্পাদিত অনেক কাজের দায়িত্ব নেবে। বিবিসি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এক বিবৃতিতে ডিবিএসের এক মুখপাত্র বিবিসিকে বলেন, ‘পরবর্তী কয়েক বছরে অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক পদগুলোর মেয়াদ শেষ হওয়ার সঙ্গে স্বাভাবিকভাবেই এই ছাঁটাই হবে।’
তবে স্থায়ী কর্মীরা এই ছাঁটাইয়ের ফলে প্রভাবিত হবেন না বলে জানিয়েছে ব্যাংকটি। পাশাপাশি ব্যাংকের বিদায়ী প্রধান নির্বাহী পিউশ গুপ্তা জানিয়েছেন, ডিবিএস প্রায় এক হাজার নতুন এআইসম্পর্কিত পদ তৈরি করবে।
এ সিদ্ধান্তের কারণে ডিবিএস প্রথম কয়েকটি বড় ব্যাংকের মধ্যে একটি হিসেবে উঠে এসেছে, যারা তাদের কার্যক্রমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাব নিয়ে বিশদ বিবরণ দিয়েছে। তবে ব্যাংকটি উল্লেখ করেনি, ছাঁটাইগুলোর মধ্যে কতগুলো পদ সিঙ্গাপুরের বা কোন কোন বিভাগ এতে বেশি প্রভাবিত হবে।
বর্তমানে ডিবিএসের আট থেকে ৯ হাজার অস্থায়ী ও চুক্তিভিত্তিক কর্মী রয়েছে। ব্যাংকটি প্রায় ৪১ হাজার কর্মী নিয়োগ দিয়েছে।
গত বছর পিউশ গুপ্তা জানিয়েছিলেন, ডিবিএস এক দশকেরও বেশি সময় ধরে এআই নিয়ে কাজ করছে। তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে আট শতাধিক এআই মডেল ৩৫০টিরও বেশি ক্ষেত্রে ব্যবহার করছি এবং ২০২৫ সালের মধ্যে এর আর্থিক প্রভাব এক বিলিয়ন সিঙ্গাপুর ডলার (৭৪৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছি।’
গুপ্তা চলতি বছরের মার্চের শেষে ব্যাংকটির দায়িত্ব ছেড়ে দিচ্ছেন। তার স্থলাভিষিক্ত হবেন বর্তমান উপপ্রধান নির্বাহী তান সু শান।
বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্রমবর্ধমান প্রসার এর সুফল ও ঝুঁকি নিয়ে নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) জানায়, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৪০ শতাংশ চাকরির ওপর এআইয়ের প্রভাব পড়বে।
আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেন, ‘বেশির ভাগ ক্ষেত্রে, এআই সামগ্রিক বৈষম্য আরো বাড়িয়ে তুলবে।’
তবে ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি গত বছর বিবিসিকে জানান, এআই কোনোভাবেই চাকরি ধ্বংসের প্রধান কারণ হবে না এবং মানব কর্মীরা নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে মানিয়ে নিতে শিখবে। তিনি আরো বলেন, ‘এআইয়ের কিছু ঝুঁকি থাকলেও এর বিশাল সম্ভাবনাও রয়েছে।’