ভারতের পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশের মালদহ জেলার হরিশ্চন্দ্রপুরের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। রসিদাবাদ নামের একটি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধান লাভলি খাতুনকে তার পদ থেকে অপসারণ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
সোমবার দেশটির সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লাভলি খাতুনের ওবিসি সার্টিফিকেট আগেই বাতিল করা হয়েছিল। তিনি বাংলাদেশি নাগরিক বলে অভিযোগ রয়েছে। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ভুয়া নথি ব্যবহার করে ভারতীয় নাগরিকত্ব পাওয়ার অভিযোগও রয়েছে।
লাভলি খাতুনের পঞ্চায়েত সদস্যের পদ বাতিল করলেও তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগে পুলিশ কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছে তা এখনও জানা যায়নি। স্থানীয় জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, লাভলি খাতুনকে পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত প্রধানের পদ থেকে অপসারণ করা হয়েছে। ওবিসি সার্টিফিকেট খারিজ হওয়ার পর লাভলির পঞ্চায়েত সদস্য ও পঞ্চায়েত প্রধানের পদ যাওয়াটা শুধু আনুষ্ঠানিকতা ছিল।
স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, লাভলি খাতুনকে সরিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উপ-প্রধানকে। তবে এ ব্যাপারে লাভলির কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এর আগে মালদহর রসিদাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান লাভলি খাতুনকে বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন সেখানকার এক পরাজিত প্রার্থী। সেই মামলায় মহকুমা শাসককে শুনানির পর সিদ্ধান্ত নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। পরে গত ২৯ জানুয়ারি লাভলির ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল করে প্রশাসন।
পরে জানা যায় লাভলি খাতুনের আসল নাম নাসিয়া শেখ। তার বাবার নাম জামিল বিশ্বাস। রাজ্যে মমতা বন্দোপাধ্যায় নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর লাভলি খাতুন ভারতে অনুপ্রবেশ করেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। পরে ২০১৫ সালে ভারতের ভোটার হন তিনি। স্থানীয়রা বলেছেন, ২০১৮ সালে ভুয়া জন্ম সনদ তৈরি করেন তিনি। এরপর স্থানীয় বাঘমারা এলাকার শেখ মুস্তাফা নামে এক ব্যক্তিকে বাবা পরিচয় দিয়ে নিজেকে ভারতীয় বলে দাবি করেন তিনি।
বাঘমারা এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, শেখ মুস্তাফার সব সন্তানকে চেনেন তারা। লাভলি খাতুন নামে ওই ব্যক্তির কোনও সন্তান নেই। এছাড়া যাদের সাক্ষী হিসাবে উল্লেখ করে হাইকোর্টে হলফনামা পেশ করেছেন লাভলি, তারা বলেছেন তাদের সই জাল করা হয়েছে।