আয়রন শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি খনিজ, যা হিমোগ্লোবিন উৎপাদনে সহায়তা করে। হিমোগ্লোবিন রক্তের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পরিবহন করে। আয়রনের অভাব হলে অ্যানিমিয়া (রক্তাল্পতা) হতে পারে, যার ফলে ক্লান্তি, শ্বাসকষ্ট, ত্বকের বিবর্ণতা, মাথা ঘোরা এবং হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়ার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
যদি শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকে, তবে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে:
১. আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
লাল মাংস (গরু, খাসি, মুরগি)
মাছ (টুনা, সারডিন, হেরিং)
ডাল এবং শিম (মুগ ডাল, মসুর ডাল, ছোলা, সয়া বিন)
পাতলা সবজি (ব্রোকলি, পালং শাক, কালে, সরষে শাক)
শস্য ও শস্যজাত খাবার (ব্রাউন রাইস, ওটস, বুট, সয়াবিন)
শুকনো ফল (খেজুর, আখরোট, অখরোট, ফিগ)
আয়রন সমৃদ্ধ সিরিয়াল বা খাবারের সাপ্লিমেন্ট
২. ভিটামিন সি গ্রহণ
ভিটামিন সি আয়রনের শোষণকে বাড়িয়ে দেয়, তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার (যেমন কমলা, আমলকি, টমেটো, স্ট্রবেরি, লেবু, ব্রকলি) আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খাওয়া উচিত।
৩. আয়রন সাপ্লিমেন্ট নেয়া
যদি খাদ্য দ্বারা পর্যাপ্ত আয়রন না পাওয়া যায়, তবে ডাক্তারের পরামর্শে আয়রন সাপ্লিমেন্ট নেয়া যেতে পারে। সাধারণত আয়রন ট্যাবলেট অথবা সিরাপ আকারে পাওয়া যায়।
৪. আয়রন শোষণের বাধা কমানো
কিছু খাবার আয়রনের শোষণ কমিয়ে দেয়। যেমন, দুধ, চা, কফি, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইত্যাদি আয়রনের শোষণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে, তাই এগুলি আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের সঙ্গে খাওয়া এড়ানো উচিত।
৫. ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া
যদি আয়রনের ঘাটতি খুব বেশি হয় বা দীর্ঘসময় ধরে চলতে থাকে, তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। ডাক্তারের পরামর্শে রক্ত পরীক্ষা করে শরীরে আয়রনের মাত্রা নির্ধারণ করা যায় এবং সঠিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
আয়রনের ঘাটতি মেটাতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণে মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন। তবে ঘাটতির লক্ষণ বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।