২,৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দুই ব্যাংককে দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক

তারল্য সংকটে থাকা সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ২,৫০০ কোটি টাকা তারল্য সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) এই সহায়তা অনুমোদন করেন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্র জানায়, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে ১,৫০০ কোটি এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংককে ১,০০০ কোটি টাকা সরাসরি তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক ও সহকারী মুখপাত্র শাহরিয়ার সিদ্দিক বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরও বলেন, “এটা হাই-পাওয়ার্ড মানি কিংবা টাকা ছাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলা যায়। জামানত ছাড়াই এ তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।”

বাংলাদেশ ব্যাংক এই ২,৫০০ কোটি টাকাসহ এ পর্যন্ত ২৯,৪১০ কোটি টাকা ছাপিয়ে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে সহায়তা দিলো।

এর আগে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ধার দেওয়া হয় ৫,৫০০ কোটি টাকা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পায় ৬,৫০০ কোটি টাকা। এছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংককে দেওয়া হয় ৫,০০০ কোটি টাকা, ইউনিয়ন ব্যাংককে ২,০০০ কোটি টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা, আইসিবি ইসলামী ব্যাংককে ১০ কোটি টাকা, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংককে ২,০০০ কোটি টাকা, এক্সিম ব্যাংককে ৮,৫০০ কোটি টাকা ও এবি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়।

গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এর আগে জানিয়েছিলেন, কোনো ব্যাংকে টাকা ছাপিয়ে ধার দেওয়া হবে না। তবে সেই কথা তিনি রাখতে পারেননি। ব্যাংকগুলোর সংকট গভীর হলে গত নভেম্বরে ছয়টি ব্যাংককে ২২,৫০০ কোটি টাকা ধার দেওয়া হয়। পরে জানুয়ারিতে দেওয়া হয় ৪,৯১০ কোটি টাকা এবং বৃহস্পতিবার ২,৫০০ কোটি টাকা দেওয়া হলো।

২০২৪ সালের নভেম্বরে এক সংবাদ সম্মেলনে গভর্নর বলেন, “আমি বলেছিলাম, আমরা টাকা ছাপাব না। আগের সে অবস্থান থেকে আমি সাময়িকভাবে সরে এসেছি, পুরোপুরিভাবে নয়। আমরা সংকটে পড়া ব্যাংকগুলোকে যে পরিমাণ তারল্যের জোগান দেব, বাজার থেকে সমপরিমাণ টাকা বন্ড ছাড়ার মাধ্যমে তুলে ফেলব।”

তিনি বলেন, “এক হাতে টাকা দেব, অন্য হাতে বাজার থেকে তুলে নেব। এ কারণে প্রক্রিয়াটিকে পুরোপুরি টাকা ছাপানো বলা যাবে না। বাজারে তারল্যের স্থিতি স্বাভাবিক থাকবে।”

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের সঙ্গে ব্যাংকখাতেও সংস্কার শুরু হয়। ক্ষমতার পালাবদলের পর এ দুই ব্যাংকসহ সাতটি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নিয়ন্ত্রণ হারায় এস আলম গ্রুপ।

আহসান এইচ মনসুর গভর্নরের দায়িত্ব পাওয়ার পর এস আলমের নিয়ন্ত্রণে থাকা পর্ষদের ব্যাংকগুলোতে তারল্য সহায়তা দেওয়া বন্ধ করে দেন। এরপর থেকেই ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট তৈরি হয়। ব্যাংক বন্ধ হয়ে যাবে এমন গুজবে ইসলামী ধারার ব্যাংকগুলো থেকে গ্রাহকরা আমানত উত্তোলন করা শুরু করেন। তখন এসব ব্যাংকের তারল্যের ওপর চাপ তৈরি হয়।


এসএস

Share this news on:

সর্বশেষ

img
একযোগে ১ লাখ ২০ হাজার কেন্দ্রে শুরু ‘এ’ ক্যাপসুল ক্যাম্পেইন Mar 15, 2025
img
থাই কর্মকর্তাদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা জারি করল যুক্তরাষ্ট্র Mar 15, 2025
img
ম্যাচ ফি কমানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করলো পাকিস্তান Mar 15, 2025
img
মির্জাপুরে ট্রাকের ধাক্কায় ওসিসহ ৫ পুলিশ আহত Mar 15, 2025
img
আইপিএলের যে নিয়ম ১৭ বছরে একবারও কাজে লাগেনি Mar 15, 2025
img
ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী আটকের প্রতিবাদে ট্রাম্প টাওয়ারে ইহুদিদের বিক্ষোভ Mar 15, 2025
img
ধর্ষণের অভিযোগে আটক এক যুবক Mar 15, 2025
img
অমুক ব্যবসায়ীর সঙ্গে অমুক রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক, কেন লেখেন না: মির্জা আব্বাস Mar 15, 2025
img
তৃতীয় বিয়ে নিয়ে কতটা আগালেন আমির? Mar 15, 2025
img
গোপালগঞ্জে যুবককে হত্যা করে ডাকাতির ঘটনায় গ্রেফতার ৩ Mar 15, 2025