লিবিয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে অবৈধ অভিবাসনের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ নানা প্ল্যাটফর্মে অভিবাসনবিরোধী মনোভাব প্রকাশ পাচ্ছে, পাশাপাশি বিভিন্ন শহরে চলছে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে লিবিয়া সরকার সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করা, শহরের প্রবেশপথ ও গুরুত্বপূর্ণ সড়কে নজরদারি বাড়ানো, অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো এবং মানবপাচার চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে।
এর অংশ হিসেবে লিবিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ইতোমধ্যে বিভিন্ন শহরে অবৈধ অভিবাসীদের আটক কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিশেষ করে রমজান মাসের পর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের ব্যাপক আকারে আটক এবং প্রত্যাবাসন কার্যক্রম শুরু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শুক্রবার (১২ মার্চ) লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, এমন পরিস্থিতিতে লিবিয়ায় বসবাসরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশিকে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। প্রবাসীদের চলাফেরা সীমিত রাখা, নিজের পাসপোর্ট ও নিয়োগকর্তার আইডি কার্ড সবসময় সঙ্গে রাখা এবং নিয়োগকর্তা ও স্থানীয় কয়েকজন লিবিয়ান শুভাকাঙ্ক্ষীর সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ বজায় রাখা জরুরি।
এছাড়া অহেতুক বাহিরে বা বাজারে দলবেঁধে ঘোরাঘুরি ও জনসমাগম এড়িয়ে চলা, প্রতিবেশী ও স্থানীয় জনগণের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ বজায় রাখা এবং আবাসস্থল যথাসম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। একইসঙ্গে প্রবাসীদের লিবিয়ার আইন, রীতিনীতি, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মান প্রদর্শন করা প্রয়োজন। জরুরি প্রয়োজনে প্রবাসীদের বাংলাদেশ দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছে দূতাবাস।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ও লিবিয়া দুটি ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মুসলিম দেশ এবং দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে সুদৃঢ়।
লিবিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশিরা সার্ভিস সেক্টর, স্বাস্থ্য, নির্মাণ ও অবকাঠামো খাতে দক্ষতা ও নিষ্ঠার মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছেন। ফলে বাংলাদেশিরা লিবিয়ার সাধারণ জনগণ, নিয়োগকর্তা এবং সরকারের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ দূতাবাস লিবিয়া সরকারের বিশেষত পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ইতোমধ্যে বৈঠক করে প্রবাসীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
এছাড়াও দূতাবাস লিবিয়ার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে।
এসএস