বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘শুধু অলীক ধারণা, ইউটিউবভিত্তিক চিন্তা বা আবেগ দিয়ে সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়।’
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে ইস্কাটনের লেডিস ক্লাবে পেশাজীবীদের সম্মানে আয়োজিত এক ইফতার মাহফিলে স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। বিএনপির পক্ষ থেকে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা আজ একটা অত্যন্ত কঠিন সময় অতিক্রান্ত করছি। আপনারা সবাই জানেন যে একটা ভয়াবহ ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত থেকে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাদের পরাজিত করে, বিতাড়িত করে আজকে একটা অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছে এবং নতুন একটা গণতান্ত্রিক পার্লামেন্ট ও সরকার গঠিত হবে সেই প্রত্যাশা নিয়ে গোটা জনগণ অপেক্ষা করছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই সময়টা আমরা সবাই যে যেখানে আছি, আমরা দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভূমিকা আমরা পালন করবো। আমরা যারা রাজনীতি করছি; যারা বিভিন্ন পেশাতে আছি; যারা বিভিন্নভাবে সরকার অথবা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি—তারা সবাই এমনভাবে কথা বলবো, কাজ করবো, তা যেন গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে সুযোগ করে দেয়।’
রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সেই কারণে আমরা প্রায় দুই বছর আগে আমাদের নেতা তারেক রহমান সংস্কারের জন্যে ৩১ দফা কর্মসূচি জাতির কাছে দিয়েছেন। সেই কর্মসূচির মধ্যে আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের যে কথাগুলো বলা আছে— সেগুলো আমরা মনে করি যথেষ্ট দেশের পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও খাপ খাওয়ানোর জন্য।’
অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করা সংস্কার কমিশনগুলোর সঙ্গে বিএনপি নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে এবং তাদের যে প্রস্তাব সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের মতামতগুলো সেভাবে উপস্থাপিত করছি। তবে একটা জিনিস আমাদের মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের ঐতিহ্য, বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক ঐতিহ্য, তাদের ধর্মীয় মূল্যবোধ, তাদের কৃষ্টি, তাদের সংস্কৃতি সব কিছুকে সামনে রেখেই আমাদের এই সামনের দিকে সংস্কার এবং এগিয়ে যাওয়ার পথকে বেছে নিতে হবে।’
তিনি উল্লেখ করেন, ‘আমাদের বাস্তববাদী চিন্তা করে ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরিবর্তনকে সামনে নিয়ে একটা নতুন বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার জন্যেই আমাদের ওই লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। এখন সমস্যা সমাধানের জন্য অত্যন্ত দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান দরকার। প্রয়োজনীয় যে সংস্কার দরকার নির্বাচনের জন্য সেগুলো সম্পন্ন করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করাই হবে সবচেয়ে বড় উইজডমের কাজ। এখন সেই উইজডমের কাজটা করাই বোধহয় সবচেয়ে ভালো হবে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বারবার একই কথা বলছেন যে আমরা যেন আমাদের পথকে ভুলে না যাই, আমরা যেন সঠিক পথে পরিচালিত হই। এমন কোনও ব্যবস্থা যেন না নেই, যা আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশেষ করে উনি (তারেক রহমান) গত পরশু যে বক্তব্য দিয়েছেন, বাংলাদেশে উগ্রবাদের যে সূচনা হচ্ছে, পথ দেখা যাচ্ছে, এই ধরনের কোনও উগ্রবাদ আমাদের গণতান্ত্রিক পথকে সম্পূর্ণ বিঘ্নিত করবে। আমরা যেন সেই পথে কোনোমতেই এগিয়ে না যাই।’
এসএস