রাশিয়ার ক্রিমিয়া অঞ্চলকে ‘অবকাশ যাপন কেন্দ্র’ বানাতে চান ট্রাম্প!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে একটি প্রধান 'আন্তর্জাতিক অবকাশ যাপন কেন্দ্রে' পরিণত করতে চান। এর বিনিময়ে তিনি মস্কোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। পুলিৎজার পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট আমেরিকান সাংবাদিক সেমুর হার্শ হোয়াইট হাউসের একটি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিনের গাজা শহরকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভিয়েরা’ বানানো নিয়ে ট্রাম্পের পরিকম্পনা যখন বিশ্বব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে, তখন ক্রিমিয়া অঞ্চলকে 'অবকাশ যাপন কেন্দ্র' বানানোর ধারণার বিষয়টি সামনে এলো। যদিও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো একবাক্যে ওই পরিকম্পনা প্রত্যাখ্যান করে আসছে।

গত জানুয়ারিতে শপথ গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প ইউক্রেন সংঘাতের অবসান ঘটাতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন। ট্রাম্পের প্রশাসন ইঙ্গিত দিয়েছে, সম্ভাব্য শান্তি চুক্তির অংশ হিসেবে ক্রিমিয়া এবং ডনবাসের কিছু অঞ্চলের ওপর মস্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য তারা উন্মুক্ত।

রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি বলছে, ২০১৪ সালে গণভোটের মাধ্যমে ক্রিমিয়া প্রজাতন্ত্র এবং সেভাস্তোপল শহর আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ায় যোগদান করে। ২০২২ সালে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক এবং খেরসন ও জাপোরোঝে অঞ্চলগুলোও একই পদ্দতি অনুসরণ করে।

ইউক্রেন এই অঞ্চলগুলোকে তাদের নিজস্ব বলে দাবি করে আসছে এবং সেগুলো ফিরিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু মস্কো জোর দিয়ে বলেছে, এসব নিয়ে কোনো আলোচনা নয়।

বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সাবস্ট্যাক ব্লগে একটি পোস্টে মার্কিন সাংবাদিক হার্শ জানিয়েছেন, ট্রাম্পের বৃহত্তর লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক সহযোগিতার মাধ্যমে মার্কিন-রাশিয়া সম্পর্ক উন্নত করা।

তিনি বলেন, ট্রাম্প ২০১৪ এবং ২০২২ সাল থেকে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নিতে এবং ক্রিমিয়াকে একটি প্রধান আন্তর্জাতিক অবকাশ যাপন কেন্দ্র পরিণত লক্ষ্যে পুতিনের সঙ্গে একটি অংশীদারিত্ব গঠন করতে চাইছেন।

হার্শের প্রতিবেদনে উদ্ধৃত করা সরকারি সূত্র আরও জানিয়েছে, তারা ডনবাস নিয়েও একই পরিকল্পনা করতে পারে।

এই সাংবাদিক উল্লেখ করেছেন, ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশ বলে স্বীকার করতে পারে আমেরিকা। ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি জো বাইডেনের প্রশাসনের থেকে স্পষ্টতই আলাদা।

এদিকে, রাশিয়ান জ্বালানি ও প্রাকৃতিক সম্পদের সম্পদের প্রতি ট্রাম্পের আগ্রহের কথা আগে থেকেই জানা যাচ্ছে। যার মধ্যে রয়েছে তেল, গ্যাস এবং খনি থেকে মুক্ত বিরল ধাতু।

জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ট্রাম্প মস্কোর বিষয়ে বেশ কয়েকটি বৈদেশিক নীতির অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। ফেব্রুয়ারিতে পুতিনের সঙ্গে ফোনালাপের পর মার্কিন ও রাশিয়ান প্রতিনিধিদল সৌদি আরবে বৈঠক করে, যেখানে উভয় পক্ষই ইউক্রেন সংঘাতের সমাধানের পরে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার এবং যৌথ ব্যবসায়িক উদ্যোগ খুঁজতে সম্মত হয়।

গত মঙ্গলবার ট্রাম্প এবং পুতিন মার্কিন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য আরেকটি ফোনালাপে যুক্ত হন। উভয় পক্ষের বিবৃতি অনুসারে, আলোচনাটি ফলপ্রসূ হয়েছে। আলোচনা অব্যাহত থাকাকালীন রাশিয়া ইউক্রেনীয় জ্বালানি অবকাঠামোর বিরুদ্ধে এক মাসের জন্য হামলা বন্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে।


এসএস

Share this news on: